Advertisement
E-Paper

মন্ত্রী নন অমল, শপথে গেলেনই না অনেকে

একদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জোটের প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও দলের ভাল ফল হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে। বাম আমলের একটানা দেড় দশকের বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়কে এ বারও তিনি হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারাও একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন, দিদি তাঁকে মন্ত্রী করবেনই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০৩:২২
জলপাইগুড়ির একটি টিভির দোকানে শপথ গ্রহণ দেখতে ভিড়।—নিজস্ব চিত্র

জলপাইগুড়ির একটি টিভির দোকানে শপথ গ্রহণ দেখতে ভিড়।—নিজস্ব চিত্র

একদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জোটের প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও দলের ভাল ফল হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে। বাম আমলের একটানা দেড় দশকের বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়কে এ বারও তিনি হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারাও একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন, দিদি তাঁকে মন্ত্রী করবেনই। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের দু’বারের বিধায়ক সেই অমল আচার্যকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রী না করায় খানিক হতাশই ইটাহারের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।

অমলবাবু নিজে অবশ্য বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় দলের ভাল ফল হয়েছে। তাই আমাকে মন্ত্রী হিসেবে দলের নেতা-কর্মীরা প্রত্যাশা করে কোনও অন্যায় করেছেন বলে মনে করছি না। দল সবই জানে। দলনেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। জেলার একমাত্র মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে।’’ অমলবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি তিলক চৌধুরীর দাবি, ‘‘দলনেত্রী গোলাম রব্বানিকে যোগ্য মনে করেছেন বলেই তাঁকে মন্ত্রিসভার সদস্য করেছেন। তাই দলের কোনও নেতা ও কর্মীদের মনে ক্ষোভ বা হতাশা থাকলে তা দূর করে নেত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া উচিত।’’

শৃঙ্খলাভঙ্গের আশঙ্কায় এ নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও দলনেত্রী অমলবাবুকে মন্ত্রী না করায় তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছেন বলে জেলা একান্তে স্বীকার করে নিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, অমলবাবু মন্ত্রী হচ্ছেন, তা ধরে নিয়ে শুক্রবার কলকাতার রেডরোডে আয়োজিত শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার কথা ছিল ইটাহারের তৃণমূলের নেতা কর্মীদের অনেকেরই। ইটাহারের জয়হাট এলাকার জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তথা দলের ইটাহার ব্লক কার্যকরী সভাপতি মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতায় রওনা হওয়ার কথা ছিল ইটাহারের বিভিন্ন এলাকার দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের। মোশারফের দাবি, ‘‘দলনেত্রী অমলবাবুকে মন্ত্রী না করায় ইটাহারের দলের সমস্ত নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাই কেউই আর কলকাতায় যাননি।’’ অমলবাবু মন্ত্রী হচ্ছেন না জানতে পেরে, যাঁরা আগে থেকে কলকাতায় ছিলেন তাঁরাও শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে এ দিন সকালে ইটাহারে ফিরে এসেছেন। মোশারফের কথায়, ‘‘অমলবাবুর নেতৃত্বে জেলায় দল ভাল ফল করলেও তাঁর মন্ত্রিত্ব না পাওয়াটা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তবে এখন দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’

২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় ন’টি আসনের মধ্যে তৃণমূল দুটি আসন দখল করেছিল। ওই বছর তৃণমূলের টিকিটে ইটাহার ও ইসলামপুর থেকে জয় পান অমলবাবু ও আব্দুল করিম চৌধুরী। তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতা দখল করার বছর খানেক পর চোপড়ার নির্দল বিধায়ক হামিদুল রহমান শাসক দলে যোগ দেন। বছর দুয়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ গোয়ালপোখরের কংগ্রেস বিধায়ক গোলাম রব্বানি। এ বছর ইসলামপুরে বিদায়ী মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী পরাজিত হলেও টানা সাড়ে তিন দশক ধরে বামেদের দখলে থাকা করণদিঘি আসনটি দখল করে তৃণমূল। সেই সঙ্গে, বাম আমলের দেড় দশকের বিধায়ক তথা মন্ত্রী এ বারের জোটপ্রার্থী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়কেও ইটাহারে ১৯ হাজার ১২০ ভোটে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হন অমলবাবু। তাই দলের এই সাফল্যে অমলবাবুকে দলনেত্রী মন্ত্রী করছেন বলে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন জেলার সব গোষ্ঠীর নেতারাই। কিন্তু বৃহস্পতিবার দলনেত্রী জেলা থেকে মন্ত্রী হিসেবে শুধু গোয়ালপোখরের বিধায়ক গোলামবাবুর নাম ঘোষণা করায় হতাশা গোপন রাখেননি কর্মীরা। গোলাম রব্বানি অবশ্য বলেছেন, ‘‘অমলবাবুর নেতৃত্বে ও পরামর্শে দলের সব নেতা-কর্মীদের নিয়েই তিনি চলবেন।’’

TMC Oath
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy