E-Paper

নাম বদল বাজারের, কারণ নিয়ে চর্চা

সেনপাড়া বাঁধে দীর্ঘদিন ধরেই বাজার বসে। বছর দুয়েক হল বাঁধের উপর দিয়ে পিচ রাস্তা হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকার নাম ফলক লাগানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ০৭:১১
জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে দিঘল বাজারের নাম রাতারাতি মুছে লেখা হয়েছে বাঁধের বাজার।

জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে দিঘল বাজারের নাম রাতারাতি মুছে লেখা হয়েছে বাঁধের বাজার। ছবি - সন্দীপ পাল।

যেন অনেকটা সুকুমার রায়ের ‘হযবরল’-এর মতো, ‘ছিল রুমাল হয়ে গেল একটা বেড়াল’।

জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়ার তিস্তাবাঁধের উপরে সরকারি বোর্ডে এত দিন জ্বলজ্বল করা ‘দিঘল বাজার’ নাম রাতারাতি ঢেকে পোস্টার টাঙিয়ে নামকরণ হয়েছে, ‘বাঁধের বাজার’। বাজারে আনাচে কানাচে ভুরি ভুরি পোস্টার ব্যানার টাঙানো হয়েছে, যাতে লেখা ‘বাঁধের বাজার’। স্থানীয় তৃণমূল পুর প্রতিনিধির উদ্যোগেই এই নাম বদল বলে খবর। তবে এই বদলের কারণের নেপথ্যে কি সরকারি জমি দখল ঘিরে তৃণমূলের অস্বস্তি এবং নবান্ন-তে যাওয়া একটি রিপোর্ট, এমনই চর্চা এলাকায়।

সেনপাড়া বাঁধে দীর্ঘদিন ধরেই বাজার বসে। বছর দুয়েক হল বাঁধের উপর দিয়ে পিচ রাস্তা হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকার নাম ফলক লাগানো হয়েছে। সেনপাড়ার বাজারটিতে ‘দিঘল বাজার’ হিসেবেই নাম ফলক ছিল। শহর এবং লাগোয়া এলাকায় এই নামেই বাজারটির পরিচিতি। লোকসভা ভোটের আগে, দিঘল বাজারে একটি তৃণমূলের পার্টি অফিস গজিয়ে ওঠে। সপ্তাহ কয়েক আগে পার্টি অফিসে এক নেতার জন্মদিন পালন এবং দুর্ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর পরে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ পার্টি অফিস ভাঙচুর করেন। সে সময়ে সরকারি জমি দখল হটানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ পেয়ে রাজ্য জুড়ে পুলিশ প্রশাসন সক্রিয়। দিঘল বাজারে সরকারি জমিতে পার্টি অফিস ঘিরে গোলমালে ‘অস্বস্তিতে’ পড়ে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ দিঘল বাজারের পার্টি অফিস ভেঙে দিতে বলেন পুলিশকে। পুলিশ পার্টি অফিস ‘সিল’ করে দেয়। সূত্রের দাবি, পুরো ঘটনার রিপোর্ট নবান্ন-তে পৌঁছয়।

তার পরে পরেই আস্ত বাজারটির নাম বদলে যায়। ‘দিঘল বাজার’ হয়ে যায় ‘বাঁধের বাজার’। সরকারি নাম ফলকে ‘দিঘল বাজার’ কথাটা ঢেকে দেওয়া হয়। বাজারের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা জয়ন্ত সেন বলেন, “বহু আগে এই বাজারটি বাঁধের বাজার নামেই পরিচিত ছিল। কে, কবে দিঘল বাজার রেখেছিল জানি না। তাই নাম বদলানো হয়েছে।” হঠাৎ বদল কেন? জয়ন্ত বলেন, “স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিরউদ্যোগেই হয়েছে। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

পার্টি অফিস ঘিরে গোলমালের পরেই বাজারের নাম বদল কি নেহাত কাকতালীয়? যদিও এলাকায় চর্চা চলছে, দিঘল বাজারের পার্টি অফিস নিয়ে নবান্ন-তে রিপোর্ট গিয়েছে, সে কথা চাউর হতেই নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। সরকারি জমি দখল করে পার্টি অফিস তৈরির অভিযোগও রয়েছে। সে সব থেকে ‘দায়মুক্ত’ হতেই বাজারের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে, চলছে চর্চা।

বিতর্কিত পার্টি অফিস তৈরির সঙ্গে যাঁদের নাম জড়িত তাঁদের জলপাইগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ড তথা এলাকার পুরপ্রতিনিধি স্বরূপ মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। স্বরূপ বলেন, “প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে বাজার বসে। আগে বাঁধের বাজারই নাম ছিল। দিঘল বাজার নাম নিয়ে অনেকেরই ক্ষোভ ছিল। তাই সবার সঙ্গে কথা বলেই আবার পুরনো নাম ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কিছুর সম্পর্ক নেই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy