সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা সুব্রত ঘোষের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে ইটাহার থানার বৈদড়া এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অলক বিশ্বাসের বাড়ি সুভাষগঞ্জেই। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ আটক, মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ৩৪১, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। ধৃতকে এ দিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। বিচারক শতরূপা ঘোষ ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় বাকি আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পেশায় ঠিকাদার অলক তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাড়াইকুড়া পঞ্চায়েতের সুভাষগঞ্জের দক্ষিণপাড় বুথ থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন তিনি। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘সুব্রতবাবুর উপর হামলার ঘটনার সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। পুলিশ হামলাকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’
সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা সুব্রত মাড়াইকুড়া পঞ্চায়েতে তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তিনিও পেশায় ঠিকাদার। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি রায়গঞ্জ শহর থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় সুভাষগঞ্জের ভিএনসি মোড় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার ধারে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে বেধড়ক মারধর করে ভারী কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তাঁর সঙ্কট এখনও কাটেনি।
পরের দিন সুব্রতর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে সুভাষগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা অলক-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়। হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ওই দিন সুভাষগঞ্জ এলাকার শতাধিক বাসিন্দা ভিএনসি মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের লোকেরা সুব্রতকে রায়গঞ্জের হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে রেখে চিকিত্সায় উদ্যোগী হলেও আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ পরিবারের লোকেদের সেই অনুমতি দেয়নি। পুলিশের দাবি, ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ঠিকাদারি কাজের টাকা লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরেই অভিযুক্তরা সুব্রতর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে খুনের চেষ্টা করেছে। অলকের আইনজীবী শুভজিৎ দের দাবি, পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে উচ্চ আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন করা হবে।