নিখোঁজ তরুণীর হদিশের দাবিতে এবার ফ্লেক্স পড়ল শিলিগুড়ি শহরে। ‘সঙ্গীতা কোথায় জানতে চায় শিলিগুড়ি’ দাবি লিখে শহরের প্রাণ কেন্দ্র হাসমি চক সহ তিনটি ব্যস্ত এলাকায় ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। সঙ্গীতা নিখোঁজ কাণ্ডে বিভিন্ন সংগঠনের জোট বাধার কথা বেশ কিছুদিন ধরেই বলে চলেছিলেন। কর্মরতা মহিলাদের একাংশও একসঙ্গে প্রতিবাদের দাবি তুলেছিলেন। এবার শহরের বাসিন্দাদের কয়েকজন ফ্লেক্স তৈরি করে বিভিন্ন মোড়ে টাঙিয়ে দিয়েছেন। হাসমিচক ছাড়া কোর্ট মোড় এবং চিলড্রেন্স পার্ক মোড়েও ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে। ফ্লেক্সের নীচে লেখা হয়েছে ‘আমরা সুবিচার চাই।’’
সেবক রোডের ফ্ল্যাট থেকে গত অগস্ট মাসে নিখোঁজ হয়ে যান সাতাশ বছরের তরুণী সঙ্গীতা কুণ্ডু। তার পর কখনও ভক্তিনগর থানা কখনও বা শিলিগুড়ি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছেন তরুণীর পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজের হদিস মেলেনি। তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবারের সদস্যরা। এ দিন শনিবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
এই মামলায় মূল অভিযুক্তের সঙ্গেই পুলিশের ‘যোগাযোগ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অশোকবাবু। শুধুমাত্র এই ঘটনাটি শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতি কেমন তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিতে পারে বলে দাবি অশোকবাবুর। সম্প্রতি প্রধাননগর এলাকায় এক আদিবাসী তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। সে বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশের সক্রিয়তার অভাবেই নানা ঘটনা ঘটছে। ওই তরুণী দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকলেও তাঁকে খুঁজে বার করতে পুলিশের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করে মেয়রের দাবি, ‘‘পুলিশ কোনও কিছু করছে না। উল্টে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকদের যোগাযোগ থাকার বিষয়টি জানতে পেরে অনেকেই উদ্বিগ্ন। বাধ্য হয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাতে হয়েছে।’’
কেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেও তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন অশোকবাবু। সম্প্রতি নিখোঁজ রহস্যের দ্রুত সমাধান ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি করে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মেয়র। তার পরেও পুলিশের গাফিলতি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অশোকবাবু বলেন, ‘‘সঙ্গীতা কোথায় শহরের মানুষ জানতে চায়। জন প্রতিনিধি হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো আমার কাজ। পরিস্থিতি নিয়ে সে কারণে তার হস্তক্ষেপ চেয়েছি।’’ বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের পরে এক সপ্তাহ কাটলেও মামলার কোনও অগ্রগতি কেন হল না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সদস্যরাও। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিরঞ্জন ভাদুড়ির বক্তব্য, ‘‘একটি আলাদা দল তৈরি করে তদন্ত হচ্ছে। তবু পুলিশ কিছু জানাতে পারছে না!’’ নিখোঁজ তরুণীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে সংগঠন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy