অশোক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মতো উত্তরবঙ্গের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আলাদা শিল্প নীতির প্রস্তাব করল বিধানসভায় শিল্প, বাণিজ্য ও উদ্যোগ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিটির তরফে ২০ পাতার রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়িতে ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে এ কথা জানান কমিটির চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত মাস পর্যন্ত কমিটির সদস্যরা কাজ করেছেন। স্ট্যান্ডিং কমিটির ৮ জন সদস্য দার্জিলিং, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলাতেও ঘুরেছেন।
অশোকবাবু বলেন, ‘‘বিভিন্ন শিল্প তালুক, প্রকল্প এলাকা দেখা ছাড়াও ব্যবসায়ী সংগঠন, অফিসারদের সঙ্গে কমিটির সদস্যরা কথা বলেছেন। শেষ পর্যন্ত কমিটি মনে করেছে, উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা শিল্পনীতির প্রয়োজন রয়েছে।’’ তিনি জানান, নতুন নীতি তৈরি করে বিভিন্ন কর ছাড়, বিদ্যুতে ছাড়, জমিতে ছাড় ছাড়াও বাণিজ্যকরণের আলাদা ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ প্রান্তের জন্য একটি শিল্প ডিরেক্টরেটও প্রয়োজন।
স্ট্যান্ডিং কমিটিতে সিপিএমের দু’জন, কংগ্রেসের একজন ছাড়াও বাকি পাঁচজন শাসকদল তৃণমূলের বিধায়ক। রাজ্যের দুই মন্ত্রী অমিত মিত্র এবং স্বপন দেবনাথও কমিটির সদস্য। অশোকবাবু জানান, উত্তরবঙ্গে ফুলবাড়ি সীমান্ত, হিলি, মহদিপুর বা চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত এই অঞ্চলে রয়েছে। প্রচুর বাণিজ্য হচ্ছে ঠিকই। একসময় কোচবিহারে চকচকা, শিলিগুড়িতে ফুডপার্ক, টি পার্ক, আনারস উন্নয়ন সেন্টার, ড্রাইপোর্ট গড়া হয়। কিন্তু তার পরেও আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। এ অঞ্চলের রেল পরিষেবা আরও বাড়ানো এবং বিমানবন্দরগুলোর সম্প্রসারণ বা সচল করার কাজ হয়নি। বিদ্যুৎ, জমির মতো সমস্যাও রয়েছে। জেলায় জেলায় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ না মিললেও কিছু জায়গায় তোলাবাজির অভিযোগও এসেছে।
অশোকবাবুর কথায়, ‘‘যোগাযোগের দিক থেকে উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড় শহর শিলিগুড়ি। দার্জিলিং জেলাও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে তথ্য প্রযুক্তি, চা শিল্প, হেলথকেয়ার বা পর্যটন বিকাশ সংক্রান্ত শিল্প হতে পারে। কিন্তু আশানুরূপভাবে তা হয়নি। তথ্য প্রযুক্তির পরিকাঠামো হলেও বিনিয়োগ আসেনি।’’
এ দিন অবশ্য পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প সম্মেলনের উদ্যোগকে ভাল উদ্যোগ বললেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কমিটির চেয়ারম্যান অশোকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু বাস্তবে তো কাজ দেখা যাচ্ছে না। এর আগে ১৫ হাজার কোটি এবং এ বার দেড় হাজার কোটির বিনিয়োগের প্রস্তাব শুনলাম। কিন্তু শিল্প কই, তা চোখে দেখছি না। নতুন নীতি এরজন্যই প্রয়োজন।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জন্য রাস্তা, বিদ্যুৎ, জমি, সহজ ঋণদানের ব্যবস্থার বিষয়গুলি স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy