Advertisement
E-Paper

অসমের নাগরিক, নথিপত্র খুঁজতে বালুরঘাটে

সবারই অসমের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, ১৯৭৮ সালের জমির দলিল সব কিছুই রয়েছে। নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার সময়ে এইসব নথি জমা দেওয়া হয়েছিল বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও এনআরসিতে নাম ওঠেনি। চার পরিবারের মোট সাত জনের নাম এনআরসিতে ঠাঁই হয়নি।

নীহার বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩০
নাগরিকপঞ্জীর দাবিতে আন্দোলনে বাঙালিরা। ফাইল চিত্র।

নাগরিকপঞ্জীর দাবিতে আন্দোলনে বাঙালিরা। ফাইল চিত্র।

৫২ বছর ধরে অসমে বসবাস। কিন্তু তার পরেও নাম ওঠেনি জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে। এ বার নাগরিকত্ব প্রমাণের শক্তপোক্ত নথি জোগাড়ের জন্য অসম থেকে ছুটে আসছেন বালুরঘাটে। নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার জন্য অসম সরকারের দেওয়া দ্বিতীয় সুযোগের মেয়াদেরও আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। কিন্তু এই অল্প সময়ে কীভাবে নথি জোগাড় করবেন তা ভেবেই ঘুম উড়েছে সমর পোদ্দার ও তাঁর পরিবারের।

অসমের ধুবড়ি জেলার বিরাশিপাড়ার বাসিন্দা সমর পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বুধবার সেখান থেকে ফোনে বললেন, ‘‘অসমে বসবাসের সমস্ত প্রমাণই রয়েছে। ভোটার কার্ড, জমির দলিল সব থাকা সত্ত্বেও নাম ওঠেনি। এখন বালুরঘাটে মামাবাড়ি গিয়ে গিয়ে আমার মায়ের কাগজপত্র খুঁজতে হচ্ছে। হাতে বেশি সময়ও নেই। খুবই চিন্তায় আছি।’’ সমররা চার ভাই। হাটে গিয়ে মণিহারি দ্রব্যের ব্যবসা তাঁদের। তাঁরা প্রায় ৫২ বছর ধরে রয়েছেন ধুবড়িতে। চার ভাইয়েরই পরিবার রয়েছে। তাঁদের সবারই অসমের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, ১৯৭৮ সালের জমির দলিল সব কিছুই রয়েছে। নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার সময়ে এইসব নথি জমা দেওয়া হয়েছিল বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও এনআরসিতে নাম ওঠেনি। চার পরিবারের মোট সাত জনের নাম এনআরসিতে ঠাঁই হয়নি। ৫৪ বছরের সমরের কথায়, ‘‘আমরা চার ভাই ও আমাদের ছেলেদের মিলিয়ে মোট সাত জনের নাম ওঠেনি।’’

তার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় পোদ্দার পরিবার। এখন এর থেকেও পুরনো নথি জোগাড় করতে সম্প্রতি বালুরঘাটে এসে মায়ের তরফের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তাঁরা। ওই পরিবার সূত্রে খবর, সমরদের মা ঊষারানি সাহা বালুরঘাটের খিদিরপুরের বাসিন্দা ছিলেন। এখানেই তাঁর বিয়ে হয়। সমরদের জন্ম খিদিরপুরে হলেও খুব ছোট বেলাতেই তাঁরা বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজের উদ্দেশে অসমে যান। লেখাপড়া করা হয়ে ওঠেনি তাঁদের চার ভাইয়ের কারওরই। তাই স্কুলের কোনও শংসাপত্র নেই। কিন্তু তাঁদের মা হয়তো স্কুলে পড়ে থাকবেন, সেই আশায় খিদিরপুরের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে হন্যে হয়ে খুঁজছেন মায়ের সংশ্লিষ্ট শংসাপত্র। টানা দেড় মাস সমররা বালুরঘাটে থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত, স্কুলে সন্ধান করে কোনও নথি জোগাড় করতে পারেননি। তাই অসমে ফিরে গিয়েছেন। বালুরঘাটের এক আত্মীয়কে দিয়ে খিদিরপুর জিএসএফপি স্কুলে পাঠিয়ে সেই নথির খোঁজ এখনও করছেন তাঁরা। স্কুল সূত্রের খবর, কোন বছর তাঁর মা এখানে ভর্তি হয়েছিলেন তা সঠিক ভাবে বলতে না পারায় নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ লাহা বলেন, ‘‘ওঁরা এসেছিলেন। এই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন এমন নথি পেলে অবশ্যই তাঁদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।’’ এ দিকে, এনআরসিতে নাম তোলার জন্য দ্বিতীয়বার আবেদন করায় মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। এই অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কীভাবে নথি জোগাড় করে দ্বিতীয়বার আবেদন করবেন এবং আবেদন করতে না পারলে ভবিষ্যতে কী হবে তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় ওই চারটি পরিবার।

NRC Assam Balurghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy