Advertisement
E-Paper

অবশেষে স্কুলে ভর্তি হল রাবেয়া, কল্পনারা

ছিটমহলে জন্ম হওয়ার কারণে তাদের কারও ওই শংসাপত্র নেই। তাই স্কুলে ভর্তি হতে পারছিল না তারা।কোচবিহার জেলাশাসকের কাছে চিঠি লেখে ওই দুই ছাত্রী। খবর পৌঁছয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছেও। প্রশাসনিক মহলে নড়াচড়ার পরে বৃহস্পতিবার জন্মের শংসাপত্র ছাড়াই দিনহাটা গার্লস স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় তাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
নিশ্চিন্ত: স্কুলে এসে রাবেয়া ও কল্পনারানি। নিজস্ব চিত্র

নিশ্চিন্ত: স্কুলে এসে রাবেয়া ও কল্পনারানি। নিজস্ব চিত্র

মুখে একগাল হাসি রাবেয়ার। উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে কল্পনারও মুখ।

স্কুল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসেই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল দু’জনে। বলছিল, “ভেবেছিলাম আর বোধহয় পড়া হবে না। মনটা ভাল লাগছিল না। বাড়িতে বসে বসে কান্না পাচ্ছিল। স্কুলে ভর্তি হতে পেরে কী যে ভাল লাগছে!”

সাবেক ছিটমহলের দিনহাটা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের বাসিন্দা দুই ছাত্রী রাবেয়া খাতুন ও কল্পনারানি মহন্ত। সরকারি স্কুল থেকেই চতুর্থ শ্রেণি পাস করেছিল তারা। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে গেলে তাদের কাছে জন্মের শংসাপত্র দাবি করে স্কুল। ছিটমহলে জন্ম হওয়ার কারণে তাদের কারও ওই শংসাপত্র নেই। তাই স্কুলে ভর্তি হতে পারছিল না তারা।

কোচবিহার জেলাশাসকের কাছে চিঠি লেখে ওই দুই ছাত্রী। খবর পৌঁছয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছেও। প্রশাসনিক মহলে নড়াচড়ার পরে বৃহস্পতিবার জন্মের শংসাপত্র ছাড়াই দিনহাটা গার্লস স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় তাদের। দিনহাটা গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লীনা মজুমদার বলেন, “ওই ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে।”

এক সময় সাবেক ছিটমহলের ছেলেমেয়েরা অভিভাবকদের পরিচয় পাল্টে স্কুল, কলেজে ভর্তি হত। ছিটমহল লাগোয়া পাশের ভারতীয় গ্রামের কোনও পরিবারের সদস্যদের নিজেদের বাবা-মায়ের পরিচয় দিয়েই পড়াশোনা করত তারা। এ ভাবেই অনেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর স্তরে পড়েছেন। ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পরে সেই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। তার পরেও একের পর এক ঘটনা সামনে উঠে আসতে শুরু করে। মশালডাঙার বাসিন্দা জেহাদ হোসেন ওবামা প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হতে গেলে জন্মের শংসাপত্র চাওয়া হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাকে ভর্তি নেওয়া হয়। একই ঘটনা ঘটল রাবেয়া ও কল্পনার সময়েও।

রাবেয়ার বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা বাংলাদেশ ভূখণ্ড দিয়ে ঘেরা সাবেক ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দা। চুক্তির পরে সেখান থেকে এপাশে চলে এসেছি। সরকার, প্রশাসন সবাই আমাদের সমস্যার কথা জানে। তার পরেও প্রতি পদে আমরা নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এটা খারাপ লাগছে।” কল্পনার বাবা হরিচরণবাবু বলেন, “আজ খুব ভাল লাগছে মেয়েরা আবার পড়তে পারবে জেনে। মেয়েদের শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। সবাই আমাদের পাশে থাকবেন বলে আশা করছি।” রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তার পরেও কেন এমন হচ্ছে তা দেখা হচ্ছে।”

Education School Students Sabek Chitmahal Enclave Birth Certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy