সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন ডাককর্মী। মঙ্গলবার নাগরিকত্বের শংসাপত্র হাতে নিয়ে বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার হেলেঞ্চার বাসিন্দা প্রমথরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘গুজবে কান দেবেন না।’’ যদিও বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে প্রমথের নাগরিকত্ব প্রাপ্তিতে সন্দেহপ্রকাশ করেছে শাসকদল তৃণমূল।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে এসে এ বাংলার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় চলে এসেছিলেন প্রমথ। বাগদার হেলেঞ্চার বৈঁচিডাঙাতে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি। ওই ব্যক্তির দাবি, সিএএ আইন কার্যকর হওয়ার পরপরই তিনি ভারতীয় নাগরিক হওয়ার জন্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এ আবেদনের কথা ভেবেছিলেন। শেষমেশ ২০২৫ সালের এপ্রিলে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। প্রশাসনিক স্তরে যাবতীয় নথিপত্র যাচাই হওয়ার পর নাগরিকত্বের শংসাপত্র হাতে পেয়েছেন ওই প্রাক্তন ডাককর্মী। স্বাভাবিক ভাবে খুশি ওই প্রৌঢ় বলেন, ‘‘এখন আর কেউ আমাকে ভারত থেকে বিতাড়িত করতে পারবে না। আমি ভারতীয় নাগরিক, ভারত সরকার সেই স্বীকৃতি দিয়েছে।’’ ভয় না পেয়ে সকল মতুয়াকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের বার্তা দিয়েছেন সদ্য নাগরিকত্ব শংসাপত্র পাওয়া মতুয়া সম্প্রদায়ের ওই প্রতিনিধি। তিনি বলেন, ‘‘সিএএ নিয়ে মতুয়াদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। আমি কারও কথায় কান না দিয়ে সিএএ-তে আবেদন করে কোনও রকম হয়রানি ছাড়া সার্টিফিকেট পেয়েছি। আমার কোনও ভাতা বা সরকারি পরিষেবা বন্ধ হয়নি।’’
বস্তুত, সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন) কার্যকর হওয়ার পর থেকেই মতুয়া মহাসঙ্ঘ উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার উদ্বাস্তু এলাকায় আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু করেছিল। ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’-এর সঙ্ঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর তখনই ঘোষণা করেছিলেন, উদ্বাস্তুদের ‘হিন্দু’ পরিচয় নিশ্চিত করতে মতুয়া মহাসঙ্ঘের তরফে শংসাপত্র দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
যাঁরা নিজেরা আবেদন জমা দিতে অক্ষম, তাঁদের হয়ে ফর্ম পূরণও মতুয়া মহাসঙ্ঘই করবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রমথের নাগরিকত্বের শংসাপত্র পাওয়া নিয়ে বিজেপি নেতা বিধানচন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘‘তৃণমূল মানুষকে সিএএ নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে। প্রমথরঞ্জন বাবু আবেদন করে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচনে সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেলে মতুয়ারা আর তৃণমূলে ভোট দেবে না। সেই কারণে তারা মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’’ অন্য দিকে, বাগদা পশ্চিম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অঘোর চন্দ্র হালদার বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব। কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে নাগরিকত্ব দিয়েছে, সেটা তারাই বলতে পারবে।’’ সংশয়ের সুরে তৃণমূলনেতা বলেন, ‘‘অনেকেই তো সিএএ-তে আবেদন করছে। তা-হলে দেখেশুনে দু’এক জনকে কেন দেওয়া হচ্ছে? এটা কোনও গিমিক নয় তো?’’