Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছাতা দিয়ে মারধরের চেষ্টা, নালিশ

এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না-থাকায় বর্ষায় নোংরা জল ঘরে ঢুকছে। রাস্তার পরিস্থিতি বেহাল। তা নিয়ে শিলিগুড়ির দুর্গানগর কলোনির মহিলাদের একাংশ কাউন্সিলর তথা বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্রকে জানাতে গেলে তিনি তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ।

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকার মহিলারা।

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকার মহিলারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৬:৪১
Share: Save:

এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না-থাকায় বর্ষায় নোংরা জল ঘরে ঢুকছে। রাস্তার পরিস্থিতি বেহাল। তা নিয়ে শিলিগুড়ির দুর্গানগর কলোনির মহিলাদের একাংশ কাউন্সিলর তথা বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্রকে জানাতে গেলে তিনি তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। রবিবার শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই মহিলারা কাউন্সিলের বিরুদ্ধে তাঁদের কয়েক জনকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়া, ছাতা দিয়ে মারতে চেষ্টা করা, গালিগালাজ করা হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানান। কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদের ওই আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শিলিগুড়ির বিহারি কল্যাণ মঞ্চ। সোমবার তাঁরা পুরসভায় গিয়ে মেয়রের কাছেও অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘কী অভিযোগ হয়েছে তা খতিয়ে দেখছি।’’

মেয়র পারিষদ পরিমলবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। আমি কেন তাদের মারধরের চেষ্টা করব? আমার কাছে ছাতাও ছিল না। ওরা যখন দেখা করতে যায় আমি বাড়ি ছিলাম না। আমি ফেরার সময় বাড়ির কাছেই দেখা হয়। ওরা সমস্যার কথা বললে জানিয়েছিলাম ওই গর্তের মধ্যে, নিচু জায়গায় বাড়ি কেন করেছেন। এ ভাবে নানা জায়গায় বাড়ি তৈরি করে বসবাস করলে সমস্যা তো হবেই। সেটা কে মেটাবে? এ কথাই বলেছি।’’ তাঁর দাবি, তিনি কারও গায়ে হাতও দেননি। বিরোধী তৃণমূলের কিছু লোকজন মিলে এ সব নিয়ে অভিযোগ তুলছে বলে জানান তিনি।

এলাকার বাসিন্দা বিন্দু মণ্ডল, সুনীতা মাহাতো, পুষ্প দত্ত, সামিনা সাহানিরা অভিযোগ করেন, এলাকার সমস্যা নিয়ে তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা তথা মহিলা সমিতির সদস্য বীরুজা দেব, সুকুমার সরকারদের কাছে যান। তাঁরা বাম সংগঠনের সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁরাই সমস্যা নিয়ে কাউন্সিলরের কাছে জানাতে বলেছিলেন। সেই মতো গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ন’টা নাগাদ তাঁরা কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বাড়ি ছিলেন না। জানানো হয়, পরিচিত এক ব্যক্তি মারা যাওয়ায় সেখানে গিয়েছেন। তাঁরা ফেরার সময় বাড়ির কাছেই কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা হয়। বিন্দু দেবী বলেন, ‘‘ওনাকে জানাই এলাকায় দিনের পর দিন আবর্জনা জমে রয়েছে। বর্ষায় ঘরের মধ্যে নোংরা জল ঢুকছে। রাস্তা নেই। একটু দেখুন। এই বলা মাত্র তিনি চটে ওঠেন। কেন সেখানে বাড়ি করেছি প্রশ্ন তুলে অকথ্য গালিগালাজ করেন। ঘাড় ধাক্কা দেন। ছাতা নিয়ে আমাকে মারতে যান। বৃদ্ধা পুষ্প দেবীকে ধাক্কা দেন। এলাকার এক তৃণমূল নেতা সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাদের উদ্ধার করেন।’’ এর পরেও ব্যাঙ্কে কাউন্সিলরের শংসাপত্র লাগবে বলে বিন্দু দেবী শনিবার ফের কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, কাউন্সিলর তাকে শংসাপত্র দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

এলাকার তৃণমূল নেত্রী সোমা দাস জানান, এলাকার কাউন্সিলরের নামে আগেও এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। কেউ তাঁর কাছে প্রয়োজনে গেলে অনেককেই তিনি গালিগালাজ করেন। এ দিন ওই মহিলাদের একাংশ তাঁর নামে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। সে সময় তাঁরাও সঙ্গে ছিলেন। দুর্গানগর কলোনির যে এলাকায় মহিলারা থাকেন সেখানে রাস্তা নেই, নিকাশি নেই। কাউন্সিলরকেই তো দেখতে হবে। পরিমলবাবুর কথায়, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে এলাকার রাস্তা, নিকাশি তৈরি নিয়ে পরিকল্পনা তো রয়েইছে। সেই মতো একে একে দেখা হবে। শংসাপত্র নিতে অন্য একজন এসেছিলেন। তাকে জানিয়েছি যাঁর শংসাপত্র তাকে চিনি না। তাই তাঁকে আসতে বলি।’’

বিহারি কল্যাণ মঞ্চের সম্পাদক করমবীর সিংহ জানান, কাউন্সিলর যে ধরনের আচরণ করেছেন তা কাম্য নয়। দলমত নির্বিশেষে এলাকার সকলেই সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে যাবেন। অথচ তিনি ভেদাভেদ করে দেখছেন। মেয়রের কাছে তাঁরা অভিযোগ জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

umbrella
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE