Advertisement
E-Paper

আচমকা বন্ধ হল বহির্বিভাগ

একে একে জুনিয়র চিকিৎসকেরা দল বেঁধে আউটডোরে ঢুকতে শুরু করেন। তাঁরা দল বেধে বিভিন্ন বিভাগে ঢুকে কর্তব্যরত সিনিয়র চিকিৎসকদের কাছে এখানে পরিষেবা প্রদান থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রাখেন। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৬:৩৯
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

এনআরএস কাণ্ডের ঘটনাপ্রবাহে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩৬ জন চিকিৎসক ইস্তফাপত্র পাঠালেন রাজ্যে স্বাস্থ্য অধিকর্তার (শিক্ষা) কাছে। শুক্রবার দুপুরে ওই ৩৬ জন চিকিৎসকের স্বাক্ষর সম্বলিত ইস্তফাপত্র পাঠানো হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে। তবে তাঁরা এ দিন কাজ করেছেন।

তাঁদের দাবি, বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে পরিস্থিতি, তাতে তাঁদের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। এ দিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তাররা তিন দিন ধরে যে কর্মবিরতি করে চলেছেন, সেই আন্দোলনের পক্ষে তাঁদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে বলেও তাঁরা দাবি করেন। এ দিকে এ দিন বিকেলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের সভাকক্ষে হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এবং সেখানে অন্তত শতাধিক চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তার আগেই ৩৬ জন চিকিৎসক তাঁদের ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে দেন কর্তৃপক্ষের কাছে।

এ দিন মালদহ মেডিক্যালে জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ চালু থাকলেও আউটডোর চালু রাখা নিয়ে জোর টানাপড়েন চলে। এক ঘণ্টা চালু থাকার পরে আউটডোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এর জেরে বিপাকে পড়েন অন্তত হাজারেরও বেশি রোগী। কেমন?

শুক্রবার সকাল ন’টা। খুলে যায় আউটডোরের সমস্ত ঘর। রোগী ও তাঁদের পরিজনদের ভিড়ও শুরু হয়ে যায় তখন থেকেই। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হাসপাতালের আউটডোরের একাধিক তলে থাকা কাউন্টার থেকে রোগীদের টিকিট বিলিও শুরু করা হয়। বেলা প্রায় ১১টা থেকে জেনারেল মেডিসিন বিভাগ, ইএনটি বিভাগ, চর্মরোগ বিভাগ, স্ত্রীরোগ বিভাগ, শিশু বিভাগ, অস্থি বিভাগ সহ বেশিরভাগ বিভাগেই সিনিয়ার চিকিৎসকরা এসে রোগী দেখা শুরু করেন। বেলা প্রায় ১২টা পর্যন্ত আউটডোরে স্বাভাবিক ভাবেই পরিষেবা চলছিল। কিন্তু তারপরেই একে একে জুনিয়র চিকিৎসকেরা দল বেঁধে আউটডোরে ঢুকতে শুরু করেন। তাঁরা দল বেধে বিভিন্ন বিভাগে ঢুকে কর্তব্যরত সিনিয়র চিকিৎসকদের কাছে এখানে পরিষেবা প্রদান থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রাখেন।

অভিযোগ, সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে সিনিয়র চিকিৎসকরা একে একে বিভাগ ছেড়ে উঠে পড়েন ও বেরিয়ে যান। ফলে আউটডোর পরিষেবা আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে তখন ওই বিভাগগুলোতে লাইনে দাঁড়িয়ে অন্তত হাজারেরও বেশি রোগী। আচমকা চিকিৎসকরা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েন। বেশ কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে পরিষেবা না পেয়ে তাঁরা ফের বাড়ির পথে পা বাড়ান। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে এ দিন মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর থেকে এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন অশোক সরকার। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে স্ত্রী গিয়ে বেলা ১১টা নাগাদ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। ঘণ্টাখানেক দাঁড়ানোর পরে যখন অশোকবাবুর স্ত্রী ডাক্তার দেখানোর সুযোগের অপেক্ষায় আচমকা জুনিয়র ডাক্তারদের একটি দল সেখানে ঢোকেন ও সেই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ উঠে বেরিয়ে যান। অশোকবাবু বলেন, “গরিব মানুষ। হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তীরে এসেও তরী ডুবে গেল। আবার আসার টাকা আমার নেই।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

Malda Medical College and Hospital Doctors Strike Malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy