Advertisement
১৬ মে ২০২৪

তিন জন মৃত

কুশমণ্ডি ব্লকের কাঁটাবাড়ি হাইস্কুল বুথে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিজেপির এক কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত বিজেপি কর্মীর নাম বিশু টুডু (৩৫)।

রণক্ষেত্র: রতুয়ায় রাস্তা অবরোধে বাসিন্দাদের আক্রমণে লুকিয়ে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

রণক্ষেত্র: রতুয়ায় রাস্তা অবরোধে বাসিন্দাদের আক্রমণে লুকিয়ে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৫:৩২
Share: Save:

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দূর অস্ত্‌, সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরে পঞ্চায়েত ভোটে রক্ত ঝরল। কুশমণ্ডি ব্লকের কাঁটাবাড়ি হাইস্কুল বুথে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিজেপির এক কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত বিজেপি কর্মীর নাম বিশু টুডু (৩৫)। তাঁর বাড়ি কাঁটাবাড়ি লাগোয়া গঙ্গারামপুর ব্লকের দাসপাড়া এলাকায়। আবার তপনে মারা গিয়েছেন সঞ্জয় সরকার (২৩) নামে তৃণমূলের এক সমর্থকও। যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাপস মণ্ডলের অভিযোগ ‘‘কসবা বাতর বুথে বিজেপি কর্মীরা ভোটবাক্স লুঠ করতে গিয়ে তাঁর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। মালদহ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথে সঞ্জয়বাবুর মৃত্যু হয়।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন ওই যুবক।’’

রবিবার রাত ১টা নাগাদ তপন ব্লকেরই গুরইল এলাকার ঘটনায় বোমা ফেটে মহিউদ্দিন মহালত (৬০) মারা যান।

বিজেপির অভিযোগ, এ দিন দুপুরে তপনেই তৃণমূলের একদল দুষ্কৃতী বুথ জ্যাম করতে এলে একদল আদিবাসী বিজেপি কর্মী তাদের বাধা দেন। এরপরেই দুই পক্ষের মধ্যে বোমা, পিস্তল, তীর, ধনুক নিয়ে ব্যাপক মারপিট হয়।

বিজেপির অভিযোগ, যে দুষ্কৃতীরা বিশুকে খুন করেছে, তারা তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ দিন দুপুরেই জেলা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। রণে ভঙ্গ দেয় জেলা কংগ্রেস। বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোটের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরা কয়েক জায়গায় রুখে দাঁড়াতেই ভোটের পারদ চড়চড় করে বাড়ে। বিকেলে তপন ব্লকে রামপুর স্কুলে দুপুর থেকে বুথ জ্যাম করে ভোটারদের মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে বিজেপির নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ান এলাকার মানুষ। শতাধিক বাসিন্দার বিক্ষোভে ওই বুথের তিনটি ভোটবাক্স আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে জাতীয় সড়কের সামনে ফেলে দেওয়া হলে তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয়। বিরাট বাহিনী নিয়ে পুলিশ এলাকায় পৌঁছে লাঠিচার্জ শুরু করে। সে সময় পুলিশকে লক্ষ করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। এলাকার বাড়িগুলিতে হানা দিয়ে পুলিশ ব্যাপক ভাঙচূর চালায় বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বালুরঘাটের খাসপুর এলাকার বুথে প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিজেপি। শাসক দলের কর্মীদের একটি ছোট গাড়ি ও বাইক ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে। পাল্টা বুথ দখলের খবর পেয়ে দলের প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ছুটে যান। সঙ্গে ছিলেন এসপি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনী।

বালুরঘাটের নাজিরপুর এলাকায় আবার বিজেপি সমর্থকদের হামলায় দুই সিপিএম কর্মী জখম হন। জেলা জুড়ে বুথ দখল করে, গুলি ছুড়ে, বোমা ফাটিয়ে শাসক দল ছাপ্পা ভোট দিয়েছে বলে বিরোধী বাম থেকে বিজেপি নেতৃত্বের তরফে অভিযোগ করা হয়। তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিরোধীরাই গণ্ডগোল করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE