গত পঞ্চায়েত ভোটে মালদহ জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপি মোট আসনের চার ভাগের এক ভাগেও প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেনি। পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী দাঁড় করাতে পেরেছিল তিন ভাগের মধ্যে মাত্র এক ভাগ আসনে। জেলা পরিষদেও ১০টা আসনে সে বার তাঁরা প্রার্থীই দিতে পারেনি। কিন্তু বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে এ বার সেই ছবি পুরোপুরিই বদলে গিয়েছে এই জেলায়।
মনোনয়নের মাত্র এক দিন বাকি। আজ সোমবার শেষ মনোনয়ন। কিন্তু তার আগেই বিজেপি গত পঞ্চায়েত ভোটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
শুধু কী তাই? মালদহের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত ব্লকগুলোতেও তাঁরা ভাল সংখ্যায় প্রার্থী দিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের থেকে ত্রিস্তরেই প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে তাঁরা। এ বারে বিজেপির এই প্রার্থী দেওয়ার হিড়িকে রীতিমতো সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূল থেকে শুরু করে কংগ্রেস ও সিপিএমও। দলগুলোর জেলা নেতৃত্বরা সামনে মানতে না চাইলেও আড়ালে আবডালে তাঁরা দলের নেতা-কর্মীদের কাছে বিজেপিকে নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বলতে শুরু করেছেন।
প্রশাসনিক সূত্রেই খবর, মালদহ জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ২২৮১টি। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি এরমধ্যে মাত্র ৫৭৬টি আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিল। একইভাবে ৪২৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে তাঁরা ১৩৩টি আসনে ও জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে ২৮টি আসনে প্রার্থী দিতে পারে। এবারে গত ২ তারিখ থেকে মনোনয়ন শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার মনোনয়নের শেষ দিন। কিন্তু ২ তারিখ থেকে শনিবার পর্যন্ত এই ছয়দিনে সেই বিজেপি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩৪৮টি আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৩৭টি আসনে ও জেলা পরিষদে ১৭টি আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, আজ সোমবার জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে বাকি সব আসনগুলোতেই তাঁরা প্রার্থী দেবে। এ ছাড়া, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে কয়েক’টি বাদ দিয়ে প্রায় সব আসনেই প্রার্থী দাঁড় করাবে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা এ বার ত্রিস্তরের সমস্ত আসনেই প্রার্থী দাঁড় করানোর টার্গেট করেছি। কয়েকটি ব্লকের কিছু পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে হয়তো প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হবে না, তবে বাকি সব আসনেই প্রার্থী থাকবে। আমাদের দলীয় সংগঠন সে ভাবেই সাজানো হয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেন, ‘‘প্রার্থী দাঁড় করালেই মানুষ ভোট দেবে না। মানুষ এবার মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের পক্ষেই শামিল হয়ে তৃণমূলকই ভোট দেবেন।’’ যদিও দলের জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘বিজেপি যেভাবে প্রার্থী দাঁড় করাচ্ছে তা চিন্তার বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy