Advertisement
E-Paper

তিনটি জেলায় শুধু দুই

জলপাইগুড়িতে সব ক’টি আসনেই বিরোধী প্রার্থী ছিলেন। তাঁরা ভাল ভোটও পেয়েছেন। তবুও বিরোধীরা খাতাই খুলতে পারেনি। পাশের দুই জেলাতেও জেলা পরিষদ প্রায় বিরোধী শূন্য। কারণ, আলিপুরদুয়ারে ১টি আসন পেয়েছে বিজেপি।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:১১
নির্দলের-রং: ‘গাড়ি’ চিহ্ন হাতিয়ার করে কোচবিহার জেলা পরিষদে পৌঁছে গেলেন নির্দল কৃষ্ণকান্ত বর্মন। কৃষ্ণকান্ত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘাসফুলের টিকিটে জিতেছিলেন । এবার সংরক্ষণের গেরোয় গতবারের জেতা আসনে লড়াই করা সম্ভব ছিল না। অন্য কোন আসনেও দলের হয়ে লড়াইয়ের টিকিট পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত আসন বদলে জেলা পরিষদেই নির্দল হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ফল ঘোষণার পর তাঁকে তৃণমূলের রঙেই সাজতে দেখা গেল। নিজস্ব চিত্র

নির্দলের-রং: ‘গাড়ি’ চিহ্ন হাতিয়ার করে কোচবিহার জেলা পরিষদে পৌঁছে গেলেন নির্দল কৃষ্ণকান্ত বর্মন। কৃষ্ণকান্ত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘাসফুলের টিকিটে জিতেছিলেন । এবার সংরক্ষণের গেরোয় গতবারের জেতা আসনে লড়াই করা সম্ভব ছিল না। অন্য কোন আসনেও দলের হয়ে লড়াইয়ের টিকিট পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত আসন বদলে জেলা পরিষদেই নির্দল হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ফল ঘোষণার পর তাঁকে তৃণমূলের রঙেই সাজতে দেখা গেল। নিজস্ব চিত্র

মাস দুয়েক আগে ফালাকাটায় পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি সভায় বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদ গঠনের হুঙ্কার দিয়েছিলেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তা নিয়ে দলের অন্দরেও হাসিঠাট্টা হয়েছিল। বিরোধীরাও ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সত্যিই বিরোধী শূন্য হয়ে গিয়েছে!

তবে জলপাইগুড়িতে সব ক’টি আসনেই বিরোধী প্রার্থী ছিলেন। তাঁরা ভাল ভোটও পেয়েছেন। তবুও বিরোধীরা খাতাই খুলতে পারেনি। পাশের দুই জেলাতেও জেলা পরিষদ প্রায় বিরোধী শূন্য। কারণ, আলিপুরদুয়ারে ১টি আসন পেয়েছে বিজেপি। কোচবিহারে দিনহাটায় একজন নির্দল প্রার্থী জেলা পরিষদে জিতেছেন। তবে তিনি তৃণমূলের জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিই ছিলেন। টিকিট না পেয়ে নির্দলে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। তাঁর দলে সমাদৃত হওয়াটা সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিরোধীরা সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন। ভোটের ফল বলছে, তিন জেলাতেই বিরোধীরা সিংহভাগ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছেন। ভোটও পেয়েছেন। খুব বেশি আসনে জামানত জব্দ হয়নি বিরোধী প্রার্থীদের। এমনকী, বাম-কংগ্রেসকে হটিয়ে কমবেশি পঞ্চাশ শতাংশ আসনেই দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি।

তৃণমূল নেতাদের এই যুক্তি উড়িয়ে দিতে পারেননি বাম-কংগ্রেস-বিজেপি নেতাদের কয়েকজন। তাঁরা একান্তে জানিয়েছেন, বেশ কিছু আসনে বিরোধীদের সম্মিলিত ভোটের হার তৃণমূলের চেয়ে বেশি। সে দিক থেকে দেখলে একই আসনে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি প্রার্থী থাকার ফসল তুলেছে তৃণমূল। সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জোট বেঁধে নিচুতলার কর্মীরা তৃণমূলকে কিছু জায়গায় হারিয়ে দিয়েছেন। যা জেলা পরিষদ স্তরে হলে হয়তো ফল অন্যরকম হত।

দ্বিতীয়ত, বামেরা ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর থেকে চা বলয়ে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকার আগ্রহ দেখাননি অনেক ট্রেড ইউনিয়ন নেতাই। আর গত ৬ বছরে ঘনঘন ডুয়ার্সে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৬ বছরে মুখ্যমন্ত্রী অন্তত ৩০ বার ওই জেলাগুলিতে গিয়ে নানা পরিষেবা বিলি করেছেন। চা বলয়ে সাইকেলই বিলি হয়েছে কয়েক লক্ষ। চা বাগানের অধিকাংশ ক্লাবই অনুদান পাচ্ছে।

দলাদলি, গোষ্ঠীকোন্দলের ধাক্কা সামলানোর কৌশল কী, সেই প্রশ্নে তৃণমূলের একজন পর্যবেক্ষক জানান, তাঁরা যে জেলায় যিনি সভাপতি তাঁকে ভোটের সময়ে ৭৫-৮০ শতাংশ আসনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছিলেন। বাকি ২০ শতাংশ আসনে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত নেতাদের আর্জি মানার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ফলে, দলের অন্দরের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়েছিল। তৃণমূলের অন্দরের খবর, কোচবিহারে তো রবীন্দ্রনাথ ঘোষ তাঁর বিপক্ষ শিবিরের নেতা ষাটোর্ধ্ব জলিল আহমেদকে টিকিট পাইয়ে জেতা নিশ্চিত করতে ঘামও ঝরিয়েছেন।

জলপাইগুড়িতে সৌরভ দলের বিক্ষুব্ধদের মান ভাঙাতে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছেন। তৃণমূলের রাজ্য কমিচির এক নেতা জানান, শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে একজনকে টিকিট দিলেও পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের ঘনিষ্ঠ এক নেতা মনোনয়ন পেশ করায় তাঁর পাশেই দাঁড়ান সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী বলেন, দলই শেষ কথা। সেটাই মাথায় রেখে কাজ করেছি।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 TMC Victory
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy