মশগুল: গল্পে মজলেন শাসক ও বিরোধী দলের প্রার্থীরা। নিজস্ব চিত্র
মাটির উঁচু ঢিবি। তার উপর কয়েকজন বসে রয়েছেন। কেউ কেউ আবার ঢিবির পাশেই দাঁড়িয়ে। চলছে হাল্কা হাসি-ঠাট্টা আর নিজেদের সংসারের গল্প। আর বুথমুখী কাউকে দেখলেই আড্ডা থেকে কেউ একজন মুচকি হেসে বলছেন, ‘‘এ বার কিন্তু আমাকে দেবেন!’’
ভোট চলছে ভোটের মতো। ওদিকে তুমুল গল্পে মশগুল শাসক ও বিরোধী সব দলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা। এ সব দেখেশুনে স্বস্তিতে মালদহের হবিবপুর ব্লকের আইহোর ছাতিয়ানগাছি গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামেরই মধুময় পাল, দিনেশ হালদারেরা জানালেন, ভোট শুরু হতেই মালদহ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অশান্তির খবর বেরোচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। তাঁদের গ্রামে অশান্তি কোনওদিন না হলেও আশঙ্কা একটা ছিলই। তবে শাসক, বিরোধী এবং নির্দল প্রার্থীদের একসঙ্গে বসে আড্ডা দিতে দেখে খুশিই হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের মতোই স্বস্তিতে ওই গ্রামের ভোটের দায়িত্বে থাকায় দুই মহিলা কনস্টেবলও।
প্রত্যেক প্রার্থীই গৃহবধূ। রাজনীতিতে তাঁরা সকলেই একেবারে আনকোরা। এদিন দুপুর ২টো নাগাদ বুথে গিয়ে দেখা গেল একসঙ্গে আট প্রার্থীই বসে রয়েছেন। নিজেদের সঙ্গে কথা বলছেন। কেউ জানালেন, এদিন ভোর সাড়ে ৪টেয় ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাজ করে, পুজো সেরে বুথে এসেছেন। কেউ আবার বলছে তড়িঘড়ি ছেলেমেয়ের রান্নাটা করে এসেছেন বুথে। ভোট নিয়ে তাঁদের মধ্যে যেন কোন তাপ-উত্তাপ নেই। নেই কোনও বিরোধিতাও।
তবে গল্পের মাঝেও ভোটারদের মুচকি হেসেই ভোট চাইছেন তৃণমূলের প্রিয়ঙ্কা হালদার, বিজেপির পূজা প্রামাণিক, কংগ্রেসের গীতা সরকার সাহা, সিপিএমের সুমিত্রা হালদারেরা। তাঁদের ভোট চাওয়ার ধরনও অন্য রকম। সকলে এক যোগে বলছেন, যাঁকে খুশি ভোট দিন। তাঁরা জানালেন, ভোটে হারজিৎ রয়েছেই। তবে তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিবেশী। একসঙ্গে কলতলায় জল নেওয়া থেকে শুরু করে নদীতে স্নান করতে যান তাঁরা। ভোট নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করার পরিস্থিতিই নেই। এখানে সবাই সমান বলে জানালেন তাঁরা।
এদিন ওই বুথের মতোই পুরাতন মালদহের বালা সাহাপুর, উপর সাকর্মা, সাকর্মা, নিত্যানন্দপুর, মুচিয়া, রামপাড়া সহ আইহো, ঋষিপুর, শ্রীরামপুর সর্বত্রই একই ছবি দেখা যায়। সব রাজনৈতিক দলের কর্মীরা একসঙ্গে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসে রয়েছেন। আর চলছে মুড়ি-ঘুগনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy