সোমবার পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে মালদহে পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে মেরেধরে তাড়িয়ে দিয়ে, বা কোথাও পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে বুথে ঢুকে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে, কোথাও আবার এলাকায় বোমাবাজি ও গুলি ছুড়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়ে বুথ দখল করে ব্যাপক ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠল। পুড়ল বাইক। আর সব ঘটনার ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠল শাসকদল তৃণমূলের দিকেই। তৃণমূলও পাল্টা অভিযোগ করেছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে। এদিকে এসব গোলমাল ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার হল পুলিশও। ভাঙচুর হল পুলিশের একাধিক গাড়িও। এদিকে প্রশাসনিক সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জেলা ভোটের হার মাত্র ৬৩.৭৭ শতাংশ। সন্ধ্যা পর্যন্তও জেলার বেশিরভাগ বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন। অনেক রাত অবধি ভোট চলেছে।
মালদহ জেলায় জেলা পরিষদের ৩৭টি আসন, পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩টি আসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২৮১টি আসনে সোমবার ভোট হয়। মোট ২৫৭৬টি বুথে ভোট নেওয়া হয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই জেলা জুড়ে বৃষ্টি হওয়ায় ভোট শুরু করতে বিলম্ব হয়ে যায়। সকাল সাড়ে সাতটাতেও ৮৭ শতাংশের বেশি বুথে ভোট শুরু করা যায়নি। এদিকে সকাল থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও বুথ দখলের অভিযোগ আসতে শুরু করে কালিয়াচক ১ ব্লকের বামনগ্রাম-মোসিমপুর, সুজাপুর, গয়েশবাড়ি, নওদা যদুপুর ও মোজমপুর এলাকাগুলি থেকে। সুজাপুরের কংগ্রেসি বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী জেলার নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের কাছে বারবার অভিযোগ করেন যে তৃণমূলের কর্মীরা এই এলাকার সমস্ত বুথ থেকে বিরোধীদের বের করে দিয়ে বুথ দখল করে পুরো ছাপ্পা ভোট করাচ্ছে। এর পরপরই অভিযোগ আসে রতুয়ার বাহারাল থেকে। সেখানে অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা দুষ্কৃতীদের সঙ্গে শাসকদলের লোকজন ব্লকের ৬৬, ৬৭, ৭১, ৭৩ প্রভৃতি বুথ এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি ও শূন্যে গুলি ছুড়ে সমস্ত ভোটারদের বাইরে বের করে দিয়ে ছাপ্পা ভোট করাচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলি ও বাসিন্দাদের একাংশ বাহারাল মোড় অবরোধও করে। সেই অবরোধ তুলতে গেলে অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়, ইটবৃষ্টি করে। অভিযোগ, রতুয়া থানার ওসি সহ পুলিশ কর্মীদের ওপর হামলা করা সহ পুলিশের একটি ভ্যান যথেচ্ছভাবে ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি পুলিশ সেখানে হেলে পুলিশের একাধিক গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নূর বলেন, ‘‘এ দিন মালদহে ভোটের নামে প্রহসন হল।’’ তৃণমূলের জোলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বললেন, ‘‘বিরোধীদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে তাই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’’