Advertisement
E-Paper

‘বন্‌ধের’ ছবি শুধু সোশ্যাল সাইটেই

সকাল ১১টায় গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ জন। তাতে আর রাস্তার নামার ঝুঁকি নেননি বাম নেতারা। শিলিগুড়ি, এনজেপি, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, ভক্তিনগর, প্রধাননগর মিলিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৯ জনকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:১৫
ধর্মঘটের দিনে রাস্তায় খেলা শিলিগুড়িেত। নিজস্ব চিত্র

ধর্মঘটের দিনে রাস্তায় খেলা শিলিগুড়িেত। নিজস্ব চিত্র

যখন বামেরা ক্ষমতায় ছিল তখন শিলিগুড়িতে রিকশায় চোঙ বেঁধে বন্‌ধ থাকলেও সুনসান হয়ে যেত শহর। পুরনো বাসিন্দারা এমনটাই জানাচ্ছেন। তখম বামেদের ডাকা বন‌্ধ মানে ছিল হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোডে ক্রিকেট খেলা হবে। বামেদের ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে দু’দিনের দেশজোড়া ধর্মঘটের প্রথম দিনে কিন্তু সে পথে হাঁটল না শিলিগুড়ি। বরং, প্রায় স্বাভাবিক থাকল রাস্তার যান চলাচল। দেখা গেল ছাত্রছাত্রী বোঝাই স্কুলবাসও। তাই শহরবাসীদের অনেকে মনে করছেন, কিছু দোকানপাট, বাজারের একাংশ বন্ধ থাকলেও অনেক দিন পরে ফের বন্‌ধ থেকে মুখ ফিরিয়ে পথে নামল শিলিগুড়ি।

যদিও পুরসভার মেয়র ও শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের মতে, কিছু যানবাহন চললেও বন্‌ধে যে সাড়া মিলেছে তা দোকান, ব্যাঙ্ক বন্ধ থেকেই স্পষ্ট। শিলিগুড়ি মহকুমার অধিকাংশ চা বাগানেও শ্রমিকেরা কাজে যাননি বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘টোটো-বাইক, অটো কিছু চলেছে। সরকারি বাস চলেছে। তবে বন্‌ধ সফল।’’ মেয়রের মতে, ভয়ে অনেকে জনজীবন স্বাভাবিক বোঝানোর জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হন। কিন্তু, কারা কাকে হুমকি দিয়েছেন তা নিয়ে অভিযোগ করেননি সিপিএম নেতারা।

যদিও এ দিন শিলিগুড়ির রাস্তায় নেমে বামেদের প্রথম সারির নেতারা জোরদার আন্দোলন করেননি কেন উঠেছে সেই প্রশ্নও। গত কয়েকদিন ধরে বাম নেতারা ‘জোরদার’ ধর্মঘট করা হবে বলে সওয়াল করছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে গুটি কয়েক মিছিল, রাস্তায় মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়েই বন্‌ধের সমর্থনে তাঁরা প্রচার সারলেন। রাস্তা বা ট্রেন অবরোধ, সরকারি বাস বন্ধ, সরকারি অফিস বন্ধের কোনও চেষ্টাই করেননি বাম নেতারা। এমনকী স্কুল কলেজে গেটেও ছিলেন না কেউ। অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকারেরা হিলকার্ট রোডে মিছিল করে পার্টি দফতরে বসে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিলেন। আর একাধিক যুব নেতা কোনওমতে মিছিল সেরে নানা ছবি সোশ্যাল সাইটে দিয়েই ‘ভার্চুয়াল’ প্রচারে ব্যস্ত থাকলেন। বিরোধীদের কটাক্ষ, সোশ্যাল মিডিয়ায় বামেরা ধর্মঘট করেছেন। অতীতের একাধিক আন্দোলন, কর্মসূচিতে ধরপাকড় ও গ্রেফতারির অভিজ্ঞতা থেকে সাত সকালে জল মাপা শুরু করেছিল বামেরা। এনজেপি স্টেশনে যাওয়ার লেকটাউন, গেটবাজার সরকারি বাস, স্কুল বাস, টোটো দাঁড় করানো শুরু হয়। পুলিশ প্রথমে বন্‌ধ সমর্থনকারীদের সতর্ক করে চলে যেতে বলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় কাউন্সিলর গোলাপ রায়, জেলার নেতা দিবস চৌবেদে’র গ্রেফতার করে পুলিশ। সকাল ১১টায় গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ জন। তাতে আর রাস্তার নামার ঝুঁকি নেননি বাম নেতারা। শিলিগুড়ি, এনজেপি, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, ভক্তিনগর, প্রধাননগর মিলিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৯ জনকে।

দুপুরে হিলকার্ট রোডের অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে নেতাদের একাংশ বলেছেন, ‘‘আমরা জানতাম আজ রাস্তায় নেমে পিকেটিং করে বন্‌ধ করতে গেলেই পুলিশ ধরবে। প্রথম দিনেই সকলে গ্রেফতার হয়ে গেলে দ্বিতীয়দিন কী হবে!’’

অশোকের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন তো সব এক এখন। আমরা শ্রমজীবীদের পক্ষে লড়াই করছি। শাসক দলের মত জোর আমাদের করতে হয় না। মানুষ সাড়া দিয়েছেন। দ্বিতীয় দিন আরও ভাল ধর্মঘট হবে।’’ যদিও তাতে আমল দিকে নারাজ শাসক দল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘বনধে’র রাজনীতি শিলিগুড়ির মানুষ চায় না। আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’

Social Media Siliguri Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy