মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা দলের সহ সভাপতি প্রদীপ প্রধান সদলবলে দল ছাড়তে চলেছেন বলে পাহাড়ে জোর গুজব। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে আটকাতে আচমকাই তাঁর বা়ড়িতে চলে গেলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। সোমবার তিনধারিয়ায় জাতীয় সড়কে ধস নিয়ে বৈঠকে পর দার্জিলিং ফেরার পথে সোজা কার্শিয়াঙে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়েন মোর্চা সুপ্রিমো। এমনকি, প্রদীপ প্রধানকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে তা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেন গুরুঙ্গ। প্রদীপবাবু জিটিএ-র চেয়ারম্যানও। তাঁর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে সেই ছবিও ফেসবুকে আপলোড করতে ভোলেননি গুরুঙ্গ।
কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন মহলে দলীয় নেতৃত্বের সম্পর্কে প্রদীপবাবু ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন। তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলেও পাহাড়ের হাওয়ায় ভাসছিল গুজব। তাই তাঁর বাড়িতে গুরুঙ্গের এই আচমকা সফরের পর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে নানা আলোচনা।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিনের পুরনো সঙ্গীর ক্ষোভের কথা শুনে তাঁকে দল ছাডা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছেন গুরুঙ্গ। তাই কোনও অনুষ্ঠান বা দলীয় কর্মসূচি ছাড়াই দলের নেতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। যদিও মোর্চা নেতাদের দাবি, কার্শিয়াং দিয়ে ফেরার সময় প্রদীপবাবুর শরীরের খোঁজখবর নেওয়া ছাড়াও এলাকায় সংগঠনের অবস্থার কথা শুনতে গিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। এর মধ্যে অন্য কোনও বিষয় নেই। প্রদীপবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘দলের সভাপতি এসেছিলেন। নানা বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। আমি তো দল ছাড়িনি।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য প্রদীপবাবু বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে সেখান থেকে কলকাতায় ফেরেন। তখন থেকেই পাহাড়ে রটে যায়, প্রদীপ প্রধানের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছে। খুব দ্রুত তিনি অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। গত রবিবার তিনি কার্শিয়াঙের নয়াবাজারের বাড়িতে ফেরার পর জল্পনা আরও বাড়ে। তাঁর বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়। তিনি মোর্চা ছাড়লে বাড়িতে হামলার আশঙ্কা থেকেই এই পাহারা বলেও প্রচার হয়ে যায়।
এ দিন সকাল থেকে রটে যায় সন্ধ্যায় সুকনাতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন প্রদীপ প্রধান। যদিও প্রদীপবাবু তা অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে গুরুঙ্গ বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘সব গুজব আর অপপ্রচার। প্রদীপ প্রধান আমাদের সঙ্গেই আছেন।’’