উত্তরপ্রদেশে বিরাট জয়ের পরে উত্তরবঙ্গের জমি দখলে আর সময় নষ্ট করতে রাজি নয় বিজেপি।
তাই মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে জনসংযোগের জন্য বিজয় উৎসবকেই অস্ত্র করেছে বিজেপি। আর সেই সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতাদেরও তৃণমূল স্তরে জনসংযোগ।
আগামী ১৫ দিন ধরে জেলার ৪১টি সাংগঠনিক ব্লকে পৃথক ভাবে উত্তরপ্রদেশ জয়ের বিজয় উৎসব হবে। বিশেষ করে, জেলার গ্রামীণ এলাকার ৩৮টি মণ্ডলে সেই উৎসব আরও জোরদার হবে বলে দল সূত্রের খবর। আগামী এপ্রিল ও মে এই দু’মাস জেলার গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বুথে সাংগঠনিক সভাও করা হবে। উত্তর দিনাজপুরে আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে জেলার ন’টি ব্লকে বিজয় মিছিল শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে দলের জেলা কমিটি। তারপর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা কর্মিসভা হবে।
বুথের সংগঠন দেখতে মাসে একবার করে আসবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। জমির খাজনা কমানোর দাবিতেও আন্দোলন হবে। দলে যোগদানের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে এক মাস। জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে উত্তরবঙ্গে সংগঠন বাড়াতে এমনই নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটের পরে দলের রাজ্য নেতৃত্ব দাবি করেছিল, তারাই পশ্চিমবঙ্গে মূল বিরোধী শক্তি হয়ে উঠছে। উত্তরপ্রদেশের ফল প্রকাশের পরে এ বার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আগামী এক মাস বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি।
দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ চলতি মাসেই ফের শিলিগুড়ি আসতে পারেন। শিলিগুড়িতে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে বুথ স্তরের বৈঠক শুরু হয়েছে। কয়েকটি বুথ ধরে মাসে একবার করে বৈঠক হবে। এ বার থেকে এমন সব বৈঠকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ অহলুওয়ালিয়া উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘অনেকেই দলের কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছেন। বুথ স্তরে বাসিন্দাদের নানা দাবিদাওয়া রয়েছে। সে সব শোনা হচ্ছে। আমি মাসে একবার করে মানুষের কথা শুনতে বুথে যাচ্ছি।’’
কোচবিহারে সংগঠন বাড়াতে আন্দোলনের ওপরেই জোর দিয়েছে বিজেপি। আগামী ১৬ মার্চ থেকেই জেলা জুড়ে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ওই দিন জমির খাজনা ও মিউটেশন ফি বৃদ্ধির অভিযোগে সমস্ত ব্লকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হবে। দেওয়া হবে স্মারকলিপিও। এ দিনই কৃষকদের থেকে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আলু কেনার দাবিতে জেলা জুড়ে দলের তরফে আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করা হবে। রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ থেকে প্রতীকী অবরোধের মতো কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে। দলের দুই রাজ্য সম্পাদক জেলায় বৈঠক করতে আসছেন আগামী ১৯ মার্চ। পর দিন জেলায় দলের সাত শতাধিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক হবে। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহ সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপির জেলা নেতা জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘কর্মী সমর্থকদের বুথ স্তরে ছোট ছোট বৈঠক করে সদস্য বাড়ানোয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাস দলে যোগদান কর্মসূচি চলবে।’’
সংগঠন বাড়াতে বিজেপির কৌশল কতটা সফল হবে তা সময় বলবে। তবে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘রাজনীতিতেও যে দিবাস্বপ্ন দেখা যায় তা রাজ্যের বিজেপি নেতারা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। বাকিটা সময় বলবে।’’