Advertisement
E-Paper

নতুন আইনের সমর্থনে প্রচারে ‘ভরসা’ বিশিষ্টরা

তবে বিজেপির সঙ্গে ওই সম্মেলনের কোনও সম্পর্ক মানতে চাননি গোপেশ, দেবাশিস ও বাবুলাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০২
প্রতিবাদী: ক্রিকেট মাঠের গ্যালারিতে এনআরসি, সিএএ বিরোধী পোস্টার। রবিবার চাকুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদী: ক্রিকেট মাঠের গ্যালারিতে এনআরসি, সিএএ বিরোধী পোস্টার। রবিবার চাকুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাতে গিয়ে কয়েক দিন আগে রায়গঞ্জে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। অভিযোগের তির উঠেছিল শাসকদলের দিকে।

বিজেপি সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে এ বার তৃণমূলের পাল্টা হিসেবে জেলার বিশিষ্টদের একাংশকে ‘অরাজনৈতিক’ ভাবে মাঠে নামিয়ে ওই আইন সম্পর্কে বাসিন্দাদের বোঝানোর কৌশল নিয়েছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। রবিবার রায়গঞ্জের ইনস্টিটিউট হলে ‘উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রবুদ্ধ নাগরিকবৃন্দ’-এর ব্যানারে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে ওই সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন গবেষক সঙ্ঘের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক বাবুলাল বালা। এ ছাড়াও সেখানে বক্তব্য রাখেন ওই সংগঠনের রাজ্য কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক দেবাশিস বিশ্বাস, বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি উৎপলেন্দু সরকার, জেলা বিজেপি নেতা সুনীল ভৌমিক। ‘উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রবুদ্ধ নাগরিকবৃন্দের’ অন্যতম আহ্বায়ক হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি গোপেশ সরকার। দর্শকাসনে ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী, সহকারী সভাপতি নিমাই কবিরাজ-সহ অনেক নেতা ও কর্মী।

তবে বিজেপির সঙ্গে ওই সম্মেলনের কোনও সম্পর্ক মানতে চাননি গোপেশ, দেবাশিস ও বাবুলাল। তাঁদের দাবি— ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে এ দিনের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়নি। নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বাসিন্দাদের ভুল বোঝাচ্ছে। ওই আইনের জেরে দেশের কোনও বৈধ নাগরিকের নাগরিকত্বের অধিকার যাবে না। বরং বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে এ রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা দেশের নাগরিকত্ব পাবেন।’’ তাঁরা জানিয়েছেন, দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে খুব শীঘ্রই ‘উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রবুদ্ধ নাগরিকবৃন্দের’ তরফে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জেলা জুড়ে বাসিন্দাদের ওই আইন সম্পর্কে সচেতন করা হবে।

জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ অবশ্য বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের বাধায় বিজেপি নেতাকর্মীরা সুষ্ঠু ভাবে জেলার ৯টি ব্লকে নতুন নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে বাসিন্দাদের সচেতন করতে পারছেন না। তাই দলের তরফে জেলার বিজেপিপন্থী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ওই আইন সম্পর্কে বাসিন্দাদের বোঝানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল।’’ তিনি জানান, ওই অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ দিন সম্মেলন করেন তাঁরা। এর পরে তাঁরা জেলা জুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ওই আইন সম্পর্কে বাসিন্দাদের সচেতন করবেন। বিশ্বজিতের যুক্তি, ‘‘জেলার বিজেপিপন্থী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকের শিক্ষাবিদ হিসেবে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। তাঁরা অরাজনৈতিক ভাবে নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে জেলার বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজ শুরু করলে, বাসিন্দারা সহজেই তাঁদের বক্তব্য ও পরামর্শ মেনে নেবেন। তৃণমূলও ওই কর্মসূচির বিরোধিতা করার সাহস পাবে না।’’

নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে ১ জানুয়ারি থেকে বিজেপি জেলার ৯টি ব্লক ও চারটি পুর এলাকায় পথসভা ও পদযাত্রা করছে। ১৬ জানুয়ারি থেকে বিজেপি নেতাকর্মীরা ওই আইনের সমর্থনে জেলা জুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেটও বিলি করছেন।

পাল্টা হিসেবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলার ৯টি ব্লক ও চারটি পুর এলাকায় পথসভা, অবস্থান বিক্ষোভ, জনসভা ও বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই কর্মসূচি চলবে।

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সম্প্রীতি ও উন্নয়নের স্বার্থে সাধারণ মানুষ জেলা জুড়ে নতুন নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছেন। মানুষের বিরোধিতায় বিজেপি জেলা জুড়ে ওই আইনের সমর্থনে প্রচারে নেমেও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। তাই বিজেপির জেলা নেতৃত্ব বাধ্য হয়ে ওই আইনের সমর্থনে বাসিন্দাদের বোঝাতে স্বঘোষিত সুবিধাবাদী কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের রাস্তায় নামিয়েছে। ঠিক সময়ে সাধারণ মানুষই তাঁদের যোগ্য জবাব দেবেন।’’

CAA NRC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy