Advertisement
০৪ মে ২০২৪

লুকিয়ে রেখে বিক্রির প্রস্তুতি

তারপর বললেন, “আজও লুকিয়ে রেখেছি, কাল থেকে যে কী হয়!” মহকুমাসদরের সবথেকে জমজমাট কাছারি মোড় এলাকায় অবশ্য গুটখা এখনও চলছে দেদারে। এক দোকানি বললেন, “কাল থেকে লুকিয়ে রাখব।”

অবাধে: বৃহস্পতিবারও গুটখা-পান মশলা বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে

অবাধে: বৃহস্পতিবারও গুটখা-পান মশলা বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:১০
Share: Save:

রাস্তার পাশে টেবিল-চেয়ার পাতা দোকান। পান-সুপুরি, বিড়ি-সিগারেট আর থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গুটখার প্যাকেট।
তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল পড়ছে। দোকানের চেয়ারে কেউ নেই। খদ্দের দেখে দৌড়ে এলেন এক যুবক। জিজ্ঞেস করলেন, “গুটখা লাগবে?” উত্তর না শুনেই আবারও বললেন, “আজকেই শেষ। সবাই লুকিয়ে ফেলেছে। আমি এখনও রেখেছি।” সেই সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন, কাল থেকে দাম ডবল। কোচবিহারের সাগরদিঘি পাড় থেকে দুশো মিটার দূরত্বেই ওই দোকান। সুনীতি রোডের এক দোকানি অবশ্য গুটখার কথা শুনেই কাঁচুমাচু করে তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন, “আজও লুকিয়ে রেখেছি, কাল থেকে যে কী হয়!” মহকুমাসদরের সবথেকে জমজমাট কাছারি মোড় এলাকায় অবশ্য গুটখা এখনও চলছে দেদারে। এক দোকানি বললেন, “কাল থেকে লুকিয়ে রাখব।”

বৃহস্পতিবার থেকেই গুটখা বন্ধের নির্দেশ থাকলেও তেমন কড়াকড়ি নেই। উল্টে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এ দিন রেকর্ড গুটখা বিক্রি হয়েছে। কেউ কেউ কয়েক ডজন করে একসঙ্গে কিনে নিয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানা আকতার ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের হাতে ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ এসে পৌঁছলেই সেই মতো অভিযানে নামা হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল জানান, তাঁরা ওই বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “এখনও তেমন ভাবে ওই বিষয়ে কড়াকড়ি হয়নি। একটু সময় লাগবে। দুই-এক অভিযান শুরু হলেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে।” কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পাশে থাকব।”

কোচবিহার সদরের গুটখা বিক্রেতারা অবশ্য সবাই ওই বিষয়ে বিশদে খোঁজ রাখছেন। কাচারি মোড়, হরিশপাল মোড় বা স্টেশন মোড় অথবা গুঞ্জবাড়ি, নতুন বাজার সব জায়গাতেই অনেকটাই সতর্ক হয়েছেন বিক্রেতারা। সাধারণত যারা পান-সিগারেট বিক্রি করেন, তাদের দোকানেই গুটখা-পানমশলা থাকে। তাঁরা ভবানীগঞ্জ বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তা কিনে নিয়ে খুচরো বিক্রি করেন। তাঁদেরই কয়েকজন জানান, পাইকারে বাজারে প্রচুর গুটখা মজুত করা হয়েছে। প্রায় সব কোম্পানির গুটখা সহজেই মিলছে। বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কেউ উৎপাদন বন্ধ করেছেন এমন কোনও বিষয় নেই। সেক্ষেত্রে একদম চুপিসারে লুকিয়ে রেখে শুক্রবার থেকে বিক্রি শুরু হবে। শহরের এক গুটখা ব্যবসায়ীর কথায়, “ঝুঁকি নিয়ে এখন বিক্রি করতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই পাঁচ টাকার জিনিস দশ টাকা, দশ টাকার জিনিস ২০ টাকা নিতে হবেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gutkha chewing tobacco
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE