ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের কাজ করতে গিয়ে প্রায় প্রতি দিনই বিএলওদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ্যে আসছে। কেউ কাজের চাপে কেঁদে ভাসাচ্ছেন, কাউকে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে হাসপাতালে। এমনকি, বিএলওর আত্মহত্যার নেপথ্যেও অল্প সময়ে বহু কাজ শেষ করার চাপকে দায়ী করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় অন্য রকম ছবি দেখা গেল কোচবিহারে। সেখানে এক বিএলও বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেরে আবার বসে গিয়েছেন এসআইআরের কাজে। অশৌচের মধ্যেই দায়িত্ব পালন করছেন।
মাত্র দু’দিন আগে বাবাকে হারিয়েছেন কোচবিহারের ৪/১৪০ নম্বর বুথের বিএলও পৌলভ গঙ্গোপাধ্যায়। বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পৌলভের ৭৬ বছরের বৃদ্ধ বাবা। এনুমারেশন ফর্ম ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে তা সংগ্রহের মাঝে বাবার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ করেছেন পৌলভ। রবিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয় বৃদ্ধকে। তার পরে ওই রাতেই হার্টফেল করে মৃত্যু হয় পৌলভের বাবার। শেষকৃত্য সারার পরে আবার এসআইআরের কাজে মন দিতে হয়েছে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার ১ ব্লকের সুখটাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই প্রাথমিক শিক্ষককে।
১৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন পৌলভ। সেখানকার বুথের বিএলওর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। এখন কাছা পরে বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন সদ্য পিতৃহারা যুবক। পৌলভের কথায়, ‘‘ডেডলাইন এগিয়ে আসছে। তাই চাপ অনেক। অন্য দিকে, নতুন নতুন গাইডলাইন জারি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন থেকে। সংসার থেকে কাজ, সমস্তটা কী ভাবে সামলাচ্ছি, তা উপরওয়ালাই জানেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বাড়ি কোচবিহার শহরের গুড়িয়াহাটি এলাকার নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে। কর্মস্থল থেকে আমার বাড়ি প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। ভোটারদের ফর্ম পৌঁছে দেওয়া এবং ফর্ম সংগ্রহের কাজ শেষ করে ফেলেছি। ওই বুথে ভোটার সংখ্যা ১২১১ জন। আর ৩৭ জনের ফর্ম জমা নেওয়া বাকি।’’
আরও পড়ুন:
বিএলও ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনকে। তিনি জানান, তাঁর পিতৃবিয়োগের খবর পেয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে বিডিও অফিস। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। দ্রুত গতিতে সেই কাজ করছেন।