Advertisement
E-Paper

উত্তরের কড়চা

দেওয়ালজোড়া লিখন আর আকাশজোড়া পতাকা। ভোট আসলেই এই দৃশ্য ফিরে ফিরে আসে। ইদানিং তার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ছে তারার আলো! আর তাতেই যেন এই গরমে খানিক স্বস্তি পাচ্ছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। কলকাতার ভোট হয়ে যাওয়ার পরে সবার নজরে এখন শিলিগুড়ির পুর নির্বাচন। আর সেই ভোটের প্রচারেই শহরে ভিড় একঝাঁক তারকার। বছরখানেক আগে লোকসভা ভোটের সময়েও একই ছবি দেখেছিল শহর।

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৭

প্রচারের ফাঁকে পড়ছে তারার আলোও

দেওয়ালজোড়া লিখন আর আকাশজোড়া পতাকা। ভোট আসলেই এই দৃশ্য ফিরে ফিরে আসে। ইদানিং তার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ছে তারার আলো! আর তাতেই যেন এই গরমে খানিক স্বস্তি পাচ্ছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। কলকাতার ভোট হয়ে যাওয়ার পরে সবার নজরে এখন শিলিগুড়ির পুর নির্বাচন। আর সেই ভোটের প্রচারেই শহরে ভিড় একঝাঁক তারকার। বছরখানেক আগে লোকসভা ভোটের সময়েও একই ছবি দেখেছিল শহর। লোকসভা ভোটের সময়ে দু’দিন ধরে শিলিগুড়িতে টানা রোড-শো, সভা করেছিলেন দেব। ভাইচুং ভূটিয়া তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায়, তিনিও শহরের অলিগলিতে রোড-শো, পদযাত্রা করেছেন। তৃণমূলের প্রচারে এসেছিল মিঠুন চক্রবর্তী, পায়েল-মিমিও। আবারও যেন তার ‘রিপিট টেলিকাস্ট’! রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত শিলিগুড়ির অন্তত ১২টি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে প্রচার চালিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। শিলিগুড়ির সেবক রোড সহ লাগোয়া এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে রোড শো করেছেন বলিউড অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরী। আজ শহরে আসার কথা বিজেপি সাংসদ গায়ক বাবুল সুপ্রিয়ের। তিনি রোড শো করবেন। তৃণমূলও পিছিয়ে নেই। আজই শহরে আসবেন তৃণমূল সাংসদ সুপারস্টার দেবও। দুপুর ১২টা থেকে টানা ২ ঘণ্টা রোড শো করবেন তিনি। জনসভা করার কথাও রয়েছে দেবের। তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে এ দিনই প্রচারে আসার কথা রয়েছে জিনাত আমনের। কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে রোড শো করার কথা রয়েছে, রাজ বব্বরের। সব মিলিয়ে এই কয়েক দিনে যেন শিলিগুড়ি কার্যত ‘ফিল্ম সিটি!’ চেটেপুটে নিচ্ছে শহরবাসীও। রামকৃষ্ণনগরের বাসিন্দা তনিমা দত্ত বলেন, ‘‘এখন তো দেখছি, ভোট এলে অটোগ্রাফের খাতা হাতে ঘুরতে হবে।’’ বাঘাযতীন পার্ক লাগোয়া এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এ বার তো দেখছি সব দলের ঝুলিতেই তারকা রয়েছে। ভোটের সময়ে মাইকে নেতাদের চেঁচামেচিতে কানঝালাপালা হয়ে যায়। তার মাঝে তারকাদের দেখে একটু চোখের আরাম পাওয়া যায়, এই যা।’’

বেয়ান-বেয়ানে

সেয়ানে-সেয়ানে লড়াইয়ের কথা বলা হয় বটে। তা বলে বেয়ানে-বেয়ানে? পুরাতন মালদহ পুরসভার ৪ নম্বর ওর্য়াডে তেমনটাই হচ্ছে। ওর্য়াডের তৃণমূল প্রার্থী বিভা অধিকারীর ভাইঝির সঙ্গে বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয় কংগ্রেস প্রার্থী শকুন্তলা দাসের ছেলের। সেই থেকে হৃদ্যতা গাঢ় হয়। যদিও ওই ওর্য়াডের তুঁতবাড়ি এলাকায় দু’জনের বাড়ির মাঝে দূরত্ব মাত্র চার-পাঁচটি বাড়ির।

বাড়িতে ভাল রান্না হলেই চলে আদান-প্রদান। পারিবারিক সম্পর্ক মধুর। দুই বেয়ানের সুসম্পর্কের কথা অজানা নয় এলাকাবাসীরও। এলাকার কলে জল আনতে গিয়েও দু’জনে চলে নানা গল্পগুজব। অবসর সময়ে সংসারের নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। তবে ভোটের প্রচারে যেতে হওয়ায় ক’দিন বিকেলে পাড়ায় দাঁড়িয়ে আর গল্প করা হচ্ছে না তাঁদের। বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের সম্বন্ধে সমালোচনা করলেও ব্যাক্তিগত সম্পর্ক তুলে ধরছেন না দুই বেয়ান। দু’জনেই বললেন, রাজনীতির লড়াই দুই দলের। ফল যাই হোক, সম্পর্ক থাকবে একই রকম মধুর।

তারা নেই

কোনও তারকা এলেন না, হেভিওয়েট নেতার দেখাও মিলল না। প্রচার শেষের ২৪ ঘণ্টা আগে প্রান্তিক গঙ্গারামপুর তাই অভিমানী। পাশের শিলিগুড়ি কিংবা মালদহের প্রচারে বিরোধী দলের লকেট থেকে শাসকদলের মহিমা পর্যন্ত সব তারকাদের প্রচার টিভিতে দেখেই দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে হল। তাই রাজনৈতিক কর্মীদেরও অনেকের মুখ ভার। বিজেপি পক্ষ থেকে গঙ্গারামপুরে বাবুল সুপ্রিয় বা রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, কাউকে চাওয়া হয়েছিল। সিপিএমের বিশাখাপত্তনমের বৈঠকের জন্য সে দলের কোনও বড় নেতারও দেখা মেলেনি। তৃণমূল কর্মীরা খুব বেশি আশা করেননি, স্থানীয় সাংসদ তথা নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষকে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও এখন দিল্লিতে। তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বললেন, ‘‘বড় বড় নেতা না এলেও অসুবিধে নেই। আমরাই সামলে নিতে পারব।’’ তা শুনে কর্মীরা যতই খুশি হন, খুশি নন ভোটাররা। পূর্ব হালদার পাড়ার গৃহবধূ সুবর্ণা ঘোষ বলেন, ‘‘তারকাদের কাছ থেকে দেখতে পেল সবাই, আমরাই পেলাম না। তাই খুব হতাশ লাগছে।’’

ভোটশান্তি

ভোটের দিন শান্তি থাকবে কিনা, তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের মাথার চুল খাড়া। কোচবিহারর ধারা একটু আলাদা। সেখানে নির্বাচনে যাতে শান্তি বজায় থাকে, তার জন্য শিবযজ্ঞ করা হচ্ছে কোচবিহারের খাগরাবাড়িতে। মঙ্গলবার রাজ আমলের ঐতিহ্য মেনে লক্ষ আহুতির শিবযজ্ঞ শুরু হল। মানে, ঘি, কাঠ, তিল, চাল প্রভৃতি সামগ্রী মিলিয়ে এক লক্ষবার আহুতি দেবেন পুরোহিতরা। পূর্ণাহুতি হবে ২৫ এপ্রিল। ২০ জন পুরোহিত যজ্ঞে আহুতি দেবেন।

পাঁচ দিন টানা ওই যজ্ঞানুষ্ঠান চলবে। বেনারস ও হরিদ্বার থেকে সাধুরা যোগ দিয়েছেন। প্রধান পুরোহিত রুদ্রাক্ষের মালা ঘুরিয়ে আহুতির হিসেব রাখবেন। আয়োজকদের তরফে বিশ্বজিৎশঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “চারিদিকে গণ্ডগোল হচ্ছে। ভোটকে ঘিরেও আশান্তি চলছে। এই যজ্ঞের মাধ্যমে এ সবের অবসান চেয়ে শান্তি স্থাপনই লক্ষ্য আমাদের।”

আসমানদারি

সবাই যখন ভোটের জমি দখলে ব্যস্ত, তখন একদল পড়ুয়ার চোখ আকাশে। মহাকাশ ও পরিবেশপ্রেমী সংস্থা রায়গঞ্জ স্টাডি অফ নেচার অ্যান্ড অ্যাসট্রোনমি ফর পিপল (স্ন্যাপ)-এর উদ্যোগে চারদিনের মহাকাশ বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ শিবির হয়ে গেল রায়গঞ্জের মোহনবাটি হাইস্কুলে! শনিবার থেকে মঙ্গলবার, চারদিনের ওই শিবিরে এসেছিল জেলার বিভিন্ন এলাকার ষষ্ঠ থেকে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের মোট ৫৫ জন পড়ুয়া। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ওই শিবিরে স্ন্যাপের সদস্যরা পড়ুয়াদের টেলিস্কোপ, সোলার চশমা-সহ নানা যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় দেখান। সেইসঙ্গে, প্রোজেক্টরের মাধ্যমে মহাকাশ বিষয়ক বিভিন্ন ভিডিও ও স্লাইড শো দেখানো হয় তাদের। স্ন্যাপের অন্যতম কার্যকরী সদস্য অভিজিত সরকার বলেন, ‘‘মহাকাশ সম্পর্কে পড়ুয়াদের আগ্রহ ও সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ।’’

North Bengal stories north bengal karcha uttorer karcha brief short stories karcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy