বাংলাদেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ ফাঁসি দেওয়া খোলা সীমান্তে চলছে টহলদারি। ছবি বিনোদ দাস।
দু’দেশের মধ্যিখানে বয়ে গিয়েছে এক নদী। মহানন্দার ওই বহমান স্রোতই সীমান্ত প্রতিবেশী দুই দেশের। নদীর পারে দাঁড়িয়ে ও পারে দৃষ্টি রাখলেই দেখা যায় ওপারে ঘন সবুজ গাছপালা, গ্রাম, ঘরবাড়ি। আপাতশান্ত একটা ছবি। এ পারেও একই রকম কোলাহলহীন এক পরিবেশ। স্বাভাবিক সময়ে তিনশো মিটার অন্তর একজন করে বিএসএফের জওয়ান মোতায়েন থাকেন বলে দাবি। তবে এখন ৫০ মিটার অন্তর একজন করে জওয়ান রয়েছেন। ঘনঘন টহল দিচ্ছেন বাহিনীর আধিকারিকেরাও। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া সীমান্তের ছবি। জওয়ানেরা জানালেন, রাতের দিকে সীমান্তের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখা হচ্ছে সেনাবাহিনীকে।
বিএসএফ সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গে ১০৯ কিলোমিটার খোলা সীমান্ত রয়েছে। সেই ফাঁকা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে। বিএসএফের তরফে ফাঁকা সীমান্তে জওয়ানদের নজরদারি দ্বিগুণ করা হয়েছে। চ্যাংরাবান্ধা এবং ফুলবাড়ির মতো সীমান্ত থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরে রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি হলে তড়িঘড়ি যাতে সেনাকে কাজে লাগানো যেতে পারে সে জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে বিএসএফের উত্তরবঙ্গের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক(পিআরও) অমিত ত্যাগী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে অনেকেই ও পার বাংলা থেকে ভারতে আসছেন। অনিয়মে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও নামানো হবে। তবে কাঁটাতারহীন কিছু এলাকায় জওয়ানদের তরফেই অস্থায়ী বেড়া দেওয়া রয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বাংলাদেশ থেকে ২৭ জন এ পারে এবং এ পার থেকে ৯২ জন বাংলাদেশে গিয়েছেন। বাংলাদেশের দিনাজপুরের বাসিন্দা বিধান সাহা ভারতে ঘুরতে এসেছিলেন। সে দেশের অস্থির পরিস্থিতি দেখে নানা আশঙ্কায় চলে এসেছেন। কিন্তু কী মনে করে এ দিন পরিবার নিয়ে ফের দেশেই ফিরে যান। যাওয়ার আগে ফুলবাড়িতে বিধান বলেন, ‘‘যদি মৃত্যু হয় জন্মভূমিতেই হোক। শেষে অন্তত দেশটাকে তো দেখে যেতে পারব। তবে শান্তি চাই।’’ বাংলাদেশের বাসিন্দা রুবেল ইসলাম ফুলবাড়ি দিয়ে এ দিন ভারতে ঢোকেন। তাঁর ক্তব্য, তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয়ের জন্য ভিসা নিয়েই এসেছেন। কিন্তু পরিবার লোকেদের কী হবে, এ প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জানি না এই অমানবিকতার শেষ কোথায়।’’ কেঁদে ফেলেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ সীমান্ত বাণিজ্য। এ দিনও আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। তাতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফুলবাড়ি কাস্টমসের সুপার সঞ্জীব কুমার বলেন, ‘‘কবে চালু হবে সরকারি কোনও নির্দেশিকা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy