Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছেলের জন্মদিনে বিনামূল্যে চিকিৎসার আয়োজন

তাঁর ছেলে ঋদ্ধিমানের বয়স রবিবার দু’বছর পূর্ণ হল। প্রথম বার জন্মদিনে অর্থাৎ গত বছর ডুয়ার্সের গেরগেণ্ডা চা বাগানে চিকিৎসা শিবির করেছিলেন। এ বছর ভাসারডাবরির মত প্রত্যন্ত গ্রামে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য শিবির। নিজস্ব চিত্র

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য শিবির। নিজস্ব চিত্র

রাজু সাহা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০৯:১০
Share: Save:

আর সবাই যখন নিজের সন্তানের জন্মদিনে কেক কেটে, জাঁকজমক অনুষ্ঠান করে দু’শো-তিনশো আমন্ত্রিতদের ভোজ খাওয়ান। সেই সময় আলিপুরদুয়ারের এক ব্যবসায়ী তার ছেলের জন্মদিনটিকে অন্য ভাবে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগী হলেন।

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ২০ কিমি দূরের প্রত্যন্ত গ্রাম ভাসারডাবরির দরিদ্র মানুষদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করলেন তিনি। আলিপুরদুয়ার বীরপাড়ার ধীমান সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীর পাশে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। জেলার তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তিন চিকিৎসক ধীমান দে, পরিতোষচন্দ্র সরকার এবং সুবীর নন্দী ছাড়াও আলিপুরদুয়ার মানবিক মুখের সম্পাদক রাতুল বিশ্বাসদের মতো মানুষদের পাশে পেয়েছেন তিনি।

রবিবার সকাল থেকে ভাসার ডাবরি গ্রামের একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য শিবির শুরু হয়েছে। ওই তিন চিকিৎসক রোগী দেখছেন। প্রেসক্রিপশন লেখার পর প্রত্যেককে ওষুধও দেওয়া হচ্ছে বিনা মূল্যে। ধীমানবাবুর আলিপুরদুয়ারে ওষুধের পাইকারি ব্যবসা। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলের জন্মদিনে ইচ্ছে হচ্ছিল অন্য কিছু করার। যা সমাজের সামান্য হলেও কাজে লাগবে। সেই ভাবনা থেকে এই উদ্যোগ।’’

তাঁর ছেলে ঋদ্ধিমানের বয়স রবিবার দু’বছর পূর্ণ হল। প্রথম বার জন্মদিনে অর্থাৎ গত বছর ডুয়ার্সের গেরগেণ্ডা চা বাগানে চিকিৎসা শিবির করেছিলেন। এ বছর ভাসারডাবরির মত প্রত্যন্ত গ্রামে।

এ দিন, ৩৫২ জন গ্রামবাসীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। রীতিমতো খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। স্থানীয় বাসিন্দা মায়া বর্মন, কবিতা মাহাতোরা জানালেন, গ্রাম থেকে ব্লক হাসপাতালের দূরত্ব ১৪ কিমি, জেলা হাসপাতাল ২০ কিমি দূরে। তাই কোনও রোগে হাসপাতালে যেতেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। রাতুলবাবু বলেন, ‘‘ধীমানবাবুই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাই তাঁর পাশে ছিলাম আমরা। ধীমানবাবুর দেখানো পথে আরও অন্যরা এগিয়ে আসুক সেটাই চাই।’’

ধীমানবাবুর শ্বশুর তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস নিজেও সামিল হয়েছেন এদিনের শিবিরে। তিনি বললেন, ‘‘নাতির জন্মদিনে এমন উদ্যোগের কথা শুনে আমি আর ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। স্বাস্থ্য শিবিরে এসে মন ভাল হয়ে গেল।’’

বারোবিশা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ধীমানবাবু বলেন, ‘‘ছেলের জন্মদিনে ধীমানবাবুর উদ্যোগে সামিল হতে পেরে গর্বিত লাগছে।’’ এদিনের শিবিরে ধীমানবাবুর স্ত্রী লাবণি এবং ছেলে ঋদ্ধিমানও এসেছিল। জন্মদিনে এত মানুষ দেখে রীতিমতো খুশি সে-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE