বিপজ্জনক যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র।
বিপজ্জনক ঘোষণার ন’বছর পরেও একইভাবে ফাটা দেওয়াল ও পলেস্তারা খসে পড়া ছাদের নিচে ব্যবসা করে চলেছেন ধূপগুড়ির সুরেশ দে স্মৃতি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। ছাদের টুকরো খসে পড়ে বেশ কয়েকবার জখম হয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্রতি মুহূর্তে ভয় আরও বড় দুর্ঘটনার। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতেও হেলদেল নেই কারও। যদিও জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের দাবি মার্কেটটি নতুন করে তৈরি করতে একটি প্রকল্প রিপোর্ট পঞ্চায়েত দফতরে পাঠানো হয়েছে।
২০০৮ সালে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয় ধূপগুড়ি শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সুরেশ দে স্মৃতি মার্কেটকে। প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ীর দোকান রয়েছে এখানে। এ ছাড়াও যত্রতত্র রয়েছে গুদাম। ১৯৯১ সালে তৈরি হয়েছিল দোতলা এই মার্কেট। জানা গিয়েছে, এর বেহাল অবস্থা দেখে ধূপগুড়ি পুরসভা এই মার্কেটের দায়িত্ব তাদের হাতে দেওয়ার জন্য জেলা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু, জেলা পরিষদ পুরসভাকে মার্কেট হস্তান্তর করেনি বলে অভিযোগ পুরসভার।
অপরিকল্পিত ভাবে তৈরী এই মার্কেটে আগুন লাগলে দমকল ঢোকারও ব্যবস্থা নেই। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই মার্কেটটি বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘নতুন মার্কেট তৈরির কোনও পরিকল্পনা ও অর্থ মঞ্জুর ছাড়াই ব্যবসায়ীদের মার্কেট ছাড়ার কথা বলা হয়েছিল। যতদিন নতুন ভবন না হয়, তত দিন আমরা কোথায় ব্যবসা করব। ব্যবসাই আমাদের রুটি রুজি।’’ তাঁদের অভিযোগ, মাকের্টের হাল ফেরানোর জন্য ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদকে বার বার জানানো হলেও কোন উদ্যোগ নেয়নি জেলা পরিষদ।
তবে সম্প্রতি জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলা পরিষদের বাস্তুকাররা মার্কেট ঘুরে নতুন ভাবে আধুনিক মানের দ্বিতল মার্কেট তৈরি করার জন্য সাড়ে দশ কোটি টাকার একটি রিপোর্ট তৈরি করে তা পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি দ্রুত টাকা মঞ্জুরের আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি জেলা পরিষদের। ধূপগুড়ির ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিডের সম্পাদক হিমাদ্রী সাহা বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীরা চাই মার্কেটের এক অংশ ভেঙে উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিয়ে কাজ শুরু হোক। মার্কেট তৈরী করতে কয়েক মাস সময় লাগবে। পুনর্বাসন না দিয়ে মার্কেট তৈরী হলে ব্যবসায়ীরা খাবে কি?’’ তিনি জানান, জেলা পরিষদ এক সময় আশ্বাস দিয়েছিল, ধূপগুড়ির ডাক বাংলো ও কমিউনিটি হলের পাশে নতুন দোকান তৈরী করে সুরেশ দে স্মৃতি মার্কেটের কিছু ব্যবসায়ীকে পুনর্বাসন দিয়ে নতুন মার্কেট তৈরির কাজ শুরু হবে। কিন্তু, ডাক বাংলো ও কমিউনিটি হলের সামনে তৈরি দোকানগুলি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই হস্তান্তরের তোড়জোড় চলছে।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নুরজাহান বেগম বলেন, “ সুরেশ দে স্মৃতি মার্কেটকে আধুনিক মানের গড়ে তুলতে পঞ্চায়েত মন্ত্রীর কাছে সাড়ে দশ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি দ্রুত ওই টাকা মঞ্জুরের আশ্বাস দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই মার্কেট গড়ার কাজে হাত দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy