আশা: অসুস্থ ছাত্রী জান্নাতুন ফিরদৌসি। ফাইল চিত্র
স্কুলছাত্রী জান্নাতুন ফিরদৌসির শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল কলকাতা হাইকোর্ট। জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এক সপ্তাহের মধ্যে ওই রিপোর্ট তলব করেছে প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। বীরপাড়া হাসপাতালে শয্যাশায়ী ওই ছাত্রী মাদারিহাটের বাসিন্দা। অবিলম্বে তাঁর উন্নততর চিকিৎসা শুরু করতেও নির্দেশও দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকারের তরফেই মামলাটি করা হয়। পাঁচজন আইনজীবী এ দিন আদালতে ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জান্নাতুনের বাবা আমজাদ আলিও। আইনজীবীদের মধ্যে অনীশ রায় জানান, সরকারি প্রকল্পে চিকিৎসা করাতে গিয়ে চিকিৎসার ভুলেই তরুণীর জীবন বিপন্ন। অথচ ঘটনার পর থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কেউ গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। অথচ সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। সেই কারণেই আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়।
অমিতবাবু জানান, মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও জলপাইগুড়ি জেলায় বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রকল্পের দুর্নীতি ও ভুল চিকিৎসার জেরে কমপক্ষে ১৪ জন ছেলেমেয়ের মৃত্যু হয়েছে। হাইকোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। মামলার আবেদনে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও চাওয়া হয়েছে জান্নাতুনের জন্যও।
এ দিন সংগঠনের আইনজীবী মধুসূদন সাহা রায় ও অনীশ রায় আদালতে জানান, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন বিভিন্ন রাজ্যকে যে টাকা দেয়, তা কী ভাবে খরচ হচ্ছে, তার নজরদারি করে না। সেই সুযোগ নিয়ে এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের একাংশ বেসরকারি নার্সিংহোম, ক্লিনিক বা হাসপাতালের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। দুর্নীতি-চক্রে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। জান্নাতুন এমনই এক দুর্নীতির শিকার। সরকারি কৌঁসুলি জহরলাল দে আদালতে জানান, সব অভিযোগের সারবত্তা নেই।
জান্নাতুনের পরিবারের দাবি, ২০১৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল জান্নাতুন। রোজ স্কুলে যেত ৬ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে। কোনও সমস্যা ছিল না। ওই বছর জুলাইয়ে স্কুলে স্বাস্থ্য শিবিরে জানানো হয় তার হৃদপিণ্ডে ফুটো রয়েছে। শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে পাঠানো হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। অমিতের অভিযোগ, ২৭ জুলাই অস্ত্রোপচারের পর পঙ্গু হয়ে পড়ে জান্নাতুন। নানা জায়গায় চেষ্টা করেও তার সুচিকিৎসা হচ্ছিল না।
আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা জানিয়েছিলেন, এসএসকেএমে অর্থোপেডিক বিভাগে জান্নাতুনকে ভর্তি করানো হবে। সেখানে ছাত্রীটির প্লাস্টিক সার্জারির এবং ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy