Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে মামলা

ওয়ার্ডের মহিলারা অভাব, অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদের গালিগালাজ করা, ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্রের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

ওয়ার্ডের মহিলারা অভাব, অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদের গালিগালাজ করা, ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্রের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সোমবার বিহারি যুব চেতনা সমিতির তরফে শিলিগুড়ি থানায় ওই মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দিয়ে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতানেত্রীদের কয়েক জন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গালিগালাজ, ধাক্কা দেওয়ার মতো যে অভিযোগ রয়েছে তাতে জামিনযোগ্য ধারাতেই মামলা রুজু হয়েছে।

বিহারি কল্যাণ সমিতির তরফেও এ দিন পুরসভায় মেয়রের সঙ্গে দেখা করে পরিমলবাবুর দুর্ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যে মহিলারা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তাঁদের তিনি এলাকার বাসিন্দা হিসাবে শংসাপত্রও দিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ জানানো হয়। মেয়র অবশ্য তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘বিষয়টি এখানেই মিটিযে নেওয়া উচিত। কাউন্সিলর এবং বাসিন্দাদের মধ্যে এ ধরনের তিক্ত সম্পর্ক কাম্য নয়। আগামী তিন দিন পুরসভার বাজেট রয়েছে। তার পর পরিমলবাবুকে নিয়েই আমি ওই এলাকায় যাব। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনও ঘটনা না হয় তা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন মেয়র।

মেয়রের ওই কথাতে অবশ্য মঞ্চের নেতাদের একাংশ আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁরা মেয়রকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরেই পরিমলবাবু এ ধরনের আচরণ করে থাকেন। বাসিন্দারা তাঁর কাছে গেলে অনেকের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করেন। মঞ্চের সম্পাদক করমবীর সিংহ জানান, কাউন্সিলর যাতে বাসিন্দাদের সঙ্গে এ ধরনের দুর্ব্যবহার না করেন তা দেখতে হবে। তা ছাড়া নাগরিক পরিষেবার কোনও সমস্যা হলে, ওয়ার্ডের আবাসিক হিসাবে শংসাপত্র নেওয়ারর প্রয়োজন পড়লে তো বাসিন্দারা তাঁর কাছেই যাবেন। তা ছাড়া তিনি বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ। বস্তিবাসীদের জন্য তাঁর আরও আন্তরিক হওয়া উচিত।

বিহারি কল্যাণ মঞ্চের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ দিন মেয়রের দফতরে গিয়েছিলেন বিন্দু মন্ডলদের মতো এলাকার মহিলাদের একাংশও। বস্তুত, বিন্দুদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতেই পরিমলবাবুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিন্দু দেবী জানান, দুর্গানগর কলোনিতে তাদের এলাকায় নিকাশি না থাকায় আবর্জনা, নোংরা জল জমে রয়েছে। বর্ষায় সেই জল ঘরে ঢুকছে। রাস্তা নেই। জলের মধ্য দিয়েই বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। কাউন্সিলরের কাছে সে কথাই তাঁরা বলতে গিয়েছিলেন। অথচ পরিমলবাবু তাদের ছাতা দিয়ে মারতে উদ্যত হন। বাসিন্দারা কেন ভিনরাজ্য থেকে এসে নিচু ওই এলাকায় বাড়ি করেছেন সেই প্রশ্ন তুলে গালিগালাজ করেন। ধাক্কা দেন। গত শুক্রবার ওই ঘটনার পর রবিবার এলাকার বাসিন্দারা থানায় যান। তাদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকজনও ছিল।

পরিমলবাবু বলেন, ‘‘আমি ওই ধরনের কিছু করিনি। মিথ্যে অভিযোগ তুললেই তো হবে না। রাজনীতি করতে এ সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, শুক্রবার ঘটনার পর তখন কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। দুই দিন পর তৃণমূলের লোকজন মিলে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতানেত্রীরা জানান, দোষ ঢাকতেই সাফাই গাইছেন ওই কাউন্সিলর। মহিলাদের তিনি গালিগালাজ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। বিহারি যুব চেতনা সমিতির কর্মকর্তা মিথিলেশ মিশ্রা বলেন, ‘‘মহিলাদের ধাক্কা দেওয়া, মারতে যাওয়ার মতো অভিযোগে কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mayor in council
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE