প্রতীকী ছবি।
শিক্ষক দিবসে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নতুন অফিস ভবনের উদ্বোধন করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু মেয়াদ শেষের এক বছর আগেই আলিপুরদুয়ার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অনুপ চক্রবর্তীকে। তাঁর জায়গায় এলেন কামাখ্যাগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক গার্গী নার্জিনারী। চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই অনুপবাবুকে সরানোর ঘটনায় জেলা শিক্ষা মহলে শোরগোল পড়েছে। তবে তৃণমুলের অনেকেই জানান, এটাই হওয়ারই ছিল।
রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারব না। কী হয়েছে জানি না।’’ অবশ্য অনুপ নিজে সোমবার বলেন, ‘‘এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। সরকার কেন আমাকে সরিয়ে দিল সেটা জানি না। তবে যেদিন থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি সেদিন থেকে খুব ভাল ভাবে কাজটি সাধ্যমতো সেরাটা করার চেষ্টা করেছি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নতুন ভবন তৈরি করেছি, কর্মী ঘাটতি পূরণ করেছি। শিক্ষকদের নিজের জেলায় বেতন নেওয়া এবং অন্যান্য সুবিধা দিতে পেরেছি।’’
জেলারই একটি মহল জানাচ্ছে, তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মোহন শর্মার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। লোকসভা ভোটের পর মোহনকে সরিয়ে মৃদুল গোস্বামীকে জেলা সভাপতি করা হয়। তার পর থেকে মোহন-ঘনিষ্ঠদের অনেকেই কোণঠাসা হতে থাকেন দলে। অনুপ চক্রবর্তী সেই তালিকায় ছিলেন। এর পাশাপাশি, করণিক থেকে অনুপের চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে জেলায় শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে বেশ ক্ষোভ ছিল বলেও অভিযোগ। ডিপিএসসি কর্মী নিয়োগে তৃণমুলের এক নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তোলেন।
তাঁর অপসারণের পিছনে এসব যুক্তি অনেকে খাড়া করলেও অন্য একটি মহলের বক্তব্য, এই অপসারণের পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলই রয়েছে। আবার প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি অংশের দাবি, অনুপ চক্রবর্তী স্বচ্ছতা এবং দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব সামলেছেন। রাজনীতিরই শিকার হলেন তিনি। তৃণমুলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য জেলার বাইরে আছি। এটা শিক্ষা দফতরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’
এদিকে, সংসদের নতুন জেলা চেয়ারপার্সন গার্গী নার্জিনারী তৃণমুল শিবিরে পরিচিত মুখ নন। দলের শিক্ষক সংগঠনে সদস্য মাত্র। জেলার কালচিনি ব্লকের মধ্য সাঁতালি গ্রামে তাঁর বাড়ি। তবে গার্গীর বাবা কালচিনির কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন। গার্গী এ দিন বলেন, ‘‘আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা সঠিক ভাবে পালন করব। জেলার প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy