E-Paper

নতুন শিক্ষা নীতির লক্ষ্যপূরণের জন্য ধৈর্য ধরতে হবে

আর একটি বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তা হল নতুন শিক্ষা নীতি মেনে কোনও বিষয়ের উপরে বই নেই।

মহেন্দ্রনাথ রায়

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

১৯৮৬ সালের শিক্ষা নীতিকে সরিয়ে ২০২০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি- ২০২০) কার্যকর হয়। লক্ষ্য, বয়স নির্বিশেষে প্রতিটি শিশুর শিক্ষাদান নিশ্চিত করা থেকে শিক্ষার উন্নতি, ন্যায়সঙ্গত শিক্ষা, শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি, স্কুল শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা-সহ উচ্চ শিক্ষায় সংস্কার। এছাড়াও শিক্ষার ‘অ্যাক্সেস’, ‘ইক্যুইটি’, গুণমান, সামর্থ্যের উপরে দাঁড়িয়ে ভারতীয় মূল্যবোধের গভীরে থাকা শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। যাতে শিক্ষার্থীদের উপর থেকে পাঠ্যক্রমের বোঝা কমে, বিষয় সম্পর্কে গভীর ধারণা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের আগ্রহ এবং আকাঙ্ক্ষার উপর ভিত্তি করে পাঠ্য বিষয় ঠিক করার সুযোগ পায়। যাতে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে দক্ষতা বিকাশ করতে সাহায্য করে।

তবে তা করতে গিয়ে বর্তমান পরিকাঠামোয় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু সমস্যার সামনে পড়তে হচ্ছে। তা কাটাতে সময় লাগবে বলেই ধারণা। কেন না বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক বিষয়ের শিক্ষক নেই। এই বিপুল শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা প্রয়োজন। এখনও তা নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে আসেনি। স্বাভাবিক ভাবে তা করতে সময়ও লাগবে।

আর একটি বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তা হল নতুন শিক্ষা নীতি মেনে কোনও বিষয়ের উপরে বই নেই। পড়ুয়া এবং শিক্ষক উভয়কেই বিভিন্ন বই ঘেঁটে সেই বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। এই বই হাতে মেলার বিষয়টিও সময় সাপেক্ষ। কেন না সেই সমস্ত বই লিখতে হবে।

সিলেবাস নিয়েও সমস্যা রয়েছে। প্রথমিক ভাবে কোন বিষয়টি পড়তে হবে তা বলা থাকছে। কিন্তু তার অধীনে ঠিক কোনটুকু পড়তে হবে, কতটা পড়তে হবে, সে সব বিস্তারিত সিলেবাস তৈরি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে তাই শিক্ষকদেরও বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে তাঁরা ঠিক কতটুকু পড়াবেন। এ নিয়ে কর্মশালা করা, আলোচনা করা, সিলেবাস ঠিক করা জরুরি। সিমেস্টার ধরে-ধরে বিষয় ধরে সে সব করা হলে তবে পড়ুয়াদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তাই নতুন শিক্ষা নীতির যে ভাল দিকগুলির কথা বলা হচ্ছে, তা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়ে গিয়েছে অনেকটা।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে, কলেজগুলিকে, বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকদের নিরলস কাজ করতে হবে। কারণ, কলেজস্তরে নতুন শিক্ষা নীতি কার্যকর হয়েছে। ২০২৬ থেকে এমএস, এমএসসি, এমকমের মতো স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নতুন শিক্ষা নীতি কার্যকর হবে।

তবে বই, বিষয়, সিলেবাস এ সব ঠিক করার ক্ষেত্রে যে গুণমানের শিক্ষকদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে, তাঁদের কী ভাবে নির্বাচন করা হবে তা স্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে, বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকলেই হবে না শিক্ষককে সৎ, নীতি পরায়ণ হতে হবে। সেই মানদণ্ড কে, কী ভাবে ঠিক করবেন, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই এ কথা বলা যায়, নতুন শিক্ষা নীতির লক্ষ্যপূরণের জন্য সময় লাগবে। তার জন্য আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।

(লেখক উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিন’)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Education Policy Indian Education System

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy