বুলবুলচণ্ডীর দেবী প্রতিমা। — নিজস্ব চিত্র
কোথাও থিমের বাহার বা কোথাও প্রতিমার আকার। কালীপুজোতে আকর্ষণের কারণ অনেক। এর সঙ্গেই জুড়েছে মেলার টানও। একাধিক পুজো ও মেলা ঘিরে এখন ভিড়ে ঠাসা মালদহের হবিবপুর।
হবিবপুর ব্লকের কালীপুজো এখন টেক্কা দিচ্ছে জেলা সদরের পুজোগুলির সঙ্গেও। ব্লকের একাধিক পুজো চমক দেখিয়েছে থিমে। অনেকক্ষেত্রেই স্থায়ী মন্দিরে দেবী মূর্তির আরাধনা হলেও বিগত কয়েক বছরে দর্শক টানতে থিমের হাত ধরেছে পুজো কমিটিগুলি। মধ্যম কেন্দুয়া পল্লি উন্নয়ন সমিতির পুজো এবার নজর কেড়েছে সার্জিক্যাল অ্যাটাক দেখিয়ে। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় সেনাদের জঙ্গি দমনের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই মণ্ডপের সজ্জায়। বাজেট বেশি না হলেও প্রত্যেকের পরিশ্রমের ফলে সার্জিক্যাল অ্যাটাকের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তানের লড়াই এখন সমস্ত জায়গায় চর্চার বিষয়। সেই থেকেই আমাদের এই ভাবনা।’’ প্রতিবারের মতো এবারও পুজোতে থিমকে বেছে নিয়েছে বক্সিনগর বিদ্যুৎ সঙ্ঘ।
অন্যদিকে থিমের চমক না থাকলেও শুধু মাত্র প্রতিমার সাজসজ্জা ও পুজোয় নিয়ম-নিষ্ঠার টানে মানুষ ভিড় জমান বুলবুলচণ্ডী ও আইহোতে। বুলবুলচণ্ডী সর্বজনীন কালী পুজো এবার ৬৮ বছরে পড়ল। এই পুজোতে প্রতিবারের মতো এবারও ৪৫ ফুটের কালী প্রতিমা করা হয়েছে। প্রতিমার উচ্চতার পাশাপাশি প্রতিমার সৌন্দর্য্যও নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। স্থায়ী মন্দিরে নিষ্ঠা সহকারে পূজিতা হন দেবী। বিসর্জনেও চমক রয়েছে এই পুজোর। শোভাযাত্রার মাধ্যমে স্থানীয় একটি পুকুরে নিয়ে গিয়ে প্রতিমার বিসর্জন দেওয়া হয়। বুলবুলচণ্ডী পুজোয় বিসর্জনের পরে বাজির প্রদর্শনীও অন্যতম আকর্ষণ।
বুলবুলচণ্ডীর মতো আইহোতেও পুজো হয় ৩৫ ফুটের দেবী প্রতিমার। এখানে দেবী শ্যামাকালী হিসেবে পূজিতা হন। এছাড়াও শুধুমাত্র নিষ্ঠার টানেই বুলবুলচণ্ডী হাসপাতাল ও মানিকোড়ার পুজোতে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। হবিবপুরের হাসপাতাল মোড়ের কালী বুড়িমা নামে পরিচিত। এখানে সোনা ও রুপোর অলঙ্কারে সেজে থাকেন দেবী। বুড়িমা ও মানিকোড়ার পুজোতে প্রতিবারের মতো এবারও রীতি মেনে শতাধিক পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে।
বাংলায় পুজোর সঙ্গে অন্যতম আকর্ষণ মেলাও। এই পুজোগুলিকে কেন্দ্র করে মেলা বসেছে ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে। মানিকোড়াতে চলবে পাঁচদিন ধরে মেলা। আইহো ও বুলবুলচণ্ডীর মেলা আবার ১৫ দিনের। প্রতিমা দর্শন এবং মেলার টানে জেলার পাশাপাশি ঝাড়খন্ড ও বিহার থেকেও বহু মানুষ হাজির হন বলে জানান, বুলবুলচণ্ডীর পুজো কমিটির সম্পাদক বিনোদ প্রসাদ।
পুজো ও মেলা ঘিরে হওয়া ভিড় সামাল দিতে তৎপর জেলা পুলিশ। ব্লক জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ বাহিনী। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই ব্লকে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’ ব্লকের প্রায় সব মেলাতে সাদা পোশাকের পুলিশও ঘুরছে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy