সরকারি অনুমোদন নেই। নেই কোনও তহবিলও। তারপরেও পুরসভার মাধ্যমে রায়গঞ্জ শহরে বেআইনি ভাবে ২৭০টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের পুরপ্রধান তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে। মোহিতবাবু উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতিও। সোমবার রাতে পুরসভার প্রশাসক তথা রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেণ্ডুপ নামগিয়েল শেরপা মোহিতবাবু সহ পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত বছরের ২২ জুলাই তত্কালীন মোহিতবাবুর পরিচালিত পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। রাজ্য সরকার পুর নির্বাচন ঘোষণা না করায় সেই থেকে সরকারি নির্দেশে এখনও পর্যন্ত প্রশাসকের দখলেই পুরসভা রয়েছে। পুলিশ বুধবার মোহিতবাবু সহ বিদায়ী ক্ষমতাসীন পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সরকারি দায়িত্বে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিশ্বাসভঙ্গ, সরকারি টাকা অপব্যবহারের চেষ্টার অভিযোগে ৪০৬, ৪০৯, ৫১১ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তার মধ্যে ৪০৬ ও ৪০৯ ধারাটি জামিন অযোগ্য। অভিযোগপত্রে মোহিতবাবু ছাড়া অন্য কোনও কাউন্সিলরের নামোল্লেখ নেই। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণের স্বার্থে মহকুমাশাসক সমস্ত প্রকল্পের কয়েকশো পাতার নথিও জমা দিয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
মহকুমাশাসকের অভিযোগ, বিদায়ী পুরবোর্ডের আমলে (২০১১-২০১৬) বেআইনি ভাবে কাজ হওয়ার কারণে রাজ্য সরকার টাকা বরাদ্দ না করেনি। তাই সমস্ত প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও শ্রমিকদের বকেয়া বিল ও মজুরি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকারি নির্দেশেই প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাস্তা ও নিকাশিনালা তৈরি, সংস্কার, আলো বসানো সহ পুরসভার বিভিন্ন সম্পত্তির পরিকাঠামোর উন্নয়নের মতো একাধিক কাজ রয়েছে।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই মোহিতবাবু রায়গঞ্জ ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। দিনভর তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। তবে এ দিন দুপুরে রায়গঞ্জে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করেন কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়, দলের দুই জেলা সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সন্দীপ বিশ্বাস। তাঁদের দাবি, সামনেই পুর নির্বাচন। নির্বাচনের মুখে মোহিতবাবুকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীদের ভয় দেখিয়ে নিষ্ক্রিয় করে রাখার ছক করেছে তৃণমূল।
পুরসভার বিদায়ী তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা প্রিয়তোষ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, মোহিতবাবু বিরোধীদের অন্ধকারে রেখে বেআইনি ভাবে বিভিন্ন কাজের প্রস্তাব পাশ করিয়ে নিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy