Advertisement
E-Paper

আধপেটা খেয়ে দিন কাটছে ত্রিপলে

এমন দুর্ভোগ সয়ে সপ্তাহ পার হতে চললেও সরকারি কোনও ত্রাণ মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের নানারাহির বাসিন্দা আমজাদ আলি একা নন।

বাপি মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৮
অসহায়: হরিশ্চন্দ্রপুরে ছাদহীন পরিবার।—নিজস্ব চিত্র।

অসহায়: হরিশ্চন্দ্রপুরে ছাদহীন পরিবার।—নিজস্ব চিত্র।

জলের তোড়ে বাড়ি ভেঙে পড়ায় মাটির উঁচু স্তুপের উপর ছেঁড়া ত্রিপল টাঙিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে পরিবারের ১০ জনকে নিয়ে রয়েছেন আমজাদ আলি। প্লাবনে নষ্ট হয়ে গিয়েছে আট বিঘের ফসল, বাড়ির সামনে মুদিখানার দোকানের জিনিস। জলে গিয়েছে চাষের জন্য মজুত করে রাখা দেড় লক্ষ টাকার সারও। ধবল বাঁধ ভেঙে ভরা সংসার চোখের সামনে ভেসে গিয়েছে। অন্ধ মেয়ে দুলালি খাতুনকে বুকে আঁকড়ে এখন কান্নাই সম্বল আমজাদের স্ত্রী হাজেরা বিবির। গ্রামে যাদের কিছু চাল, গম রয়েছে তা চেয়েচিন্তে আধপেটা খেয়ে দিন কাটছে।

এমন দুর্ভোগ সয়ে সপ্তাহ পার হতে চললেও সরকারি কোনও ত্রাণ মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের নানারাহির বাসিন্দা আমজাদ আলি একা নন। লাগোয়া মালসাবাদ, ডাটিয়ন, রাধিকাপুর, ডহরা তো বটেই ব্লকের বাকি ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ দুর্গত মানুষেরই এমনই অবস্থায় দিন কাটলেও ত্রাণ মেলেনি বলে অভিযোগ।

চাঁচলের মহকুমাশাসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। ওই এলাকায় কেন ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ উঠছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

গত তিন দশকে বন্যা দেখেননি নানারাহির সম্পন্ন কৃষক আমজাদ আলি। কিন্তু এ বার বিহারের ধবল বাঁধ বাদ সাধায় বিহার লাগোয়া ওই ব্লকের প্রায় গোটাটাই জলে ডুবেছে। ঘরদোরের পাশাপাশি ডুবে নষ্ট হয়েছে জমির ফসলও। তাই আমজাদ আলির মতো পথে বসেছেন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই। তারপরেও সরকারি ত্রাণ না মেলায় এক রকম অনাহারে অর্ধাহারেই দিন কাটছে দুর্গতদের।

আমজাদ আলির বড় ছেলে মজিবর রহমান বলেন, ‘‘চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল। আর কোনওদিন ঘুরে দাঁড়াতে পারব কি না কে জানে। সব শেষ হয়ে গেলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।’’

নানারাহির দিনমজুর আজাহার আলিও বলেন, ‘‘স্ত্রী ছেলেমেয়ে সহ ৯ জনকে নিয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। কোনও সাহায্য মেলেনি।’’

নানারাহির গ্রাম বিকাশ সমিতির সম্পাদক নাজিমুল হক বলেন, ‘‘নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে হাসপাতাল থেকে জলবাহিত রোগ প্রতিরোধের কিছু ওষুধ কয়েকটি জায়গায় দিতে পেরেছি।’’

জেলা পরিষদের সিপিএমের স্থানীয় সদস্য শেখ খলিল বলেন, ‘‘শুধু সুলতাননগরে ২৫টি বুথে দুর্গতের সংখ্যা ৪৫ হাজার। আর ত্রাণ বলতে মিলেছে শুধু ১১০০ ত্রিপল।’’

Flood Dwellers চাঁচল Corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy