Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
কাঠগড়ায় আইএনটিটিইউসি

কুপন ছাপিয়ে টাকা আদায়

সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির নামে ইংরেজবাজার শহরে টোটো পিছু ৬২০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির বিরুদ্ধে। আইএনটিটিইউসি ভুক্ত মালদহ জেলা ই-রিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের নামে ওই টাকা তোলা হচ্ছে।

এমন কুপনই ছাপানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।

এমন কুপনই ছাপানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৪
Share: Save:

সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির নামে ইংরেজবাজার শহরে টোটো পিছু ৬২০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির বিরুদ্ধে। আইএনটিটিইউসি ভুক্ত মালদহ জেলা ই-রিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের নামে ওই টাকা তোলা হচ্ছে। যদিও ওই টাকার মধ্যে বিশ্বকর্মা পূজোর জন্য নেওয়া ২০ টাকার কুপন দিলেও বাকি টাকার কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু যাঁরা টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের টোটোতে সঙ্গে সঙ্গে একটি করে সংগঠনের লোগো বা স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং কিছু দিন পরে সংগঠনের একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। সেই পরিচয়পত্রে সভাপতি হিসেবে মালদহ জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি মানব বন্দ্যোপাধ্যায় ও চেয়ারম্যান হিসেবে পুরসভার কাউন্সিলার অম্লান ভাদুড়ির নাম রয়েছে। এই টাকা আদায় নিয়ে সংগঠনের মধ্যেই তোলপাড় পড়েছে।

জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি মানব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘কিছু টোটোচালক মারফত জানতে পেরেছি যে আইএনটিটিইউসি-র নাম ভাঙিয়ে টোটো প্রতি ৬২০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এ ভাবে টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ ভাবে অনৈতিক এবং অনুমোদিত নয়।’’ তিনি পরিষ্কার বলেন, ‘‘সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী মাসিক ২ টাকার বেশি কারও কাছ থেকে নেওয়া যাবে না। আমি আবেদন করেছি, এই টাকা নেওয়া বন্ধ করার। পাশাপাশি যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁরা যেন ওই টাকা ফেরত নিয়ে নেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরিচয়পত্রের বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হবে।’’ আর চেয়ারম্যান অম্লানবাবু বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় রয়েছি। পুরো ঘটনা কী হয়েছে তা জানা নেই। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য ২০ টাকার কুপন দেওয়ার কথা শুনেছি।’’

আইএনটিটিইউসি সংগঠনের একটি সূত্র থেকেই জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার শহরের সদরঘাটে মালদহ জেলা ই-রিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের যে কার্যালয় রয়েছে, সেখান থেকেই টোটো চালক পিছু ৬২০ টাকা করে আদায় চলছে. শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের দাদাগিরির ভয়ে নাম না প্রকাশ করলেও একাধিক টোটো চালক জানিয়েছেন, টাকা নেওয়া হচ্ছে কয়েকটি ধাপে। প্রথমে নাম নথিভুক্ত করতে গেলে ১০০ টাকা দিয়ে ছবি সহ ফর্ম পূরণ করানো হচ্ছে। কিছু দিন পর বাকি চারশো টাকা মেটালে সংগঠনের আই-কার্ড বা পরিচয়পত্র মিলছে। এ ছাড়া ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে টোটোতে সংগঠনের স্টিকার লাগাতে। সেটি প্রথম দিনই মিলছে। এই ৬০০ টাকার কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তবে বাকি যে ২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে, তা বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য বলে অবশ্য কুপন মিলছে। সংগঠনেই প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির জন্য বছরে ২৪ টাকা নেওয়ার কথা, সেখানে পুজোর কুপন বাদ দিয়ে ৬০০ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে! সেই টাকার হিসেবও বা কোথায়! যে কার্যালয় থেকে ওই টাকা আদায় হচ্ছে সেখানকার কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

extortion TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE