বাড়ি থেকে হস্টেলে ফিরতে চাইছিল না দুই বান্ধবী। বাড়ির লোক কারণ জানতে চাইলে তারা কাঁদত। বহু চাপাচাপির পরে, বান্ধবীর মা-কে চিঠি দিয়েছিল এক ছাত্রী। সে চিঠির সুবাদে স্কুলের হস্টেলে নবম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুরের এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে এক ছাত্রীর পরিবার পুলিশের কাছে সেই অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে মঙ্গলবার ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। তবে তিনি পলাতক। ইসলামপুর পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, “পকসো আইনে মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।”
এই পরিস্থিতিতে এ দিন বৈঠকে বসে স্কুলের পরিচালন সমিতি। সমিতির সভাপতি বলেন, “এক জন প্রধান শিক্ষক যদি স্কুলের হস্টেলে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকেন, তা হলে ছাত্রীরা কোথায় নিরাপত্তা পাবে? আমরা নির্যাতিতা দুই ছাত্রীর পাশে রয়েছি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ইস্তফা দিয়ে বেপাত্তা। পুরো বিষয়টি জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তাদের জানিয়েছি।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত দু’মাস ওই দুই ছাত্রী কিছুতেই হস্টেলে যেতে চাইছিল না। পরিবার থেকে হস্টেলে যাওয়ার কথা বললে, তারা কান্নাকাটি করছিল। তাদের মধ্যে এক ছাত্রী ‘যৌন হেনস্থার’ ওই অভিজ্ঞতার কথা একটি চিঠিতে লিখে বান্ধবীর (সহপাঠী) বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের ব্যাগে রেখে দেয়। চিঠি পেয়ে শিউরে ওঠেন অন্য ছাত্রীর মা। সোমবার দুপুরে তিনি স্কুলে গিয়ে বিষয়টি জানান। সে রাতেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, “আমার মেয়ে এবং তার সহপাঠী একসঙ্গে হস্টেলে থাকত। প্রধান শিক্ষক ওদের বার বার যৌন হেনস্থা করেছেন, সে মর্মে আমার মেয়ের বান্ধবী আমাকে চিঠি দিয়েছিল। স্কুলের পরিচালন সমিতি এবং পুলিশকে বিস্তারিত জানিয়েছি।” অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের মোবাইল এ দিন বন্ধ ছিল। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার।
উত্তর দিনাজপুর জেলা শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অসিত দাস বলেন, “পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)