ছেলের বিরুদ্ধে টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। আর তার জেরে মায়ের ফ্যামিলি পেনশন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দিল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। ফলে বিপাকে পড়েছেন রায়গঞ্জের বীরনগরের বাসিন্দা প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মীর বৃদ্ধা স্ত্রী মণিকা সরকার।
মণিকাদেবীর অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে রায়গঞ্জের এমজি রোডে ব্যাঙ্কের শাখার পেনশন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় হয়ে থাকায় সংসার খরচের টাকা তুলতে পারছেন না। ধারদেনা করে এই ক’মাস চললেও এমন পরিস্থিতি যে আর চালানোর উপায় নেই। চিকিৎসার খরচের টাকাও হাতে নেই। ছেলেও সমস্যায় রয়েছে। এই ওই অ্যাকাউন্ট চালু না হলে না খেয়ে মরতে হবে বলে জানালেন তিনি।
ঘটনার পরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে অভিযোগ করেছেন মণিকাদেবী। ৩০ মে রায়গঞ্জ ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক স্বপন কুমার রায় ‘ফ্যামিলি পেনশন অ্যাকাউন্টটি’ চালুর নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজারকে শোকজ করে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার শুভেন্দুশেখর বেরা বলেন, ‘‘ওটি পেনশন অ্যাকাউন্ট নয়। অ্যাকাউন্টটি ছেলের সঙ্গে যৌথ ভাবে রয়েছে। ওনার ছেলে আমাদের ব্যাঙ্কের করিমপুর শাখার আধিকারিক। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি টাকার বেশি তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। তাই ফ্রিজ় করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ক্রেতা সুরক্ষা আদালত পেনশন অ্যাকাউন্ট চালু করতে বলেছে ঠিকই, কিন্তু ব্যাঙ্কের কলকাতার প্রধান শাখা থেকে উপযুক্ত ফোরামে আবেদন করে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ আনা হয়েছে। ১২ জুন শুনানির দিন তা পেশ করা হবে।
রায়গঞ্জ ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রেজিস্ট্রার মনজিৎ রাহা জানান, ব্যাঙ্কে মহিলার পেনশন অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তা না হয়ে যদি যৌথ অ্যাকাউন্ট হয় তা হলে ব্যাঙ্ক সেটা পেনশন অ্যাকাউন্ট হিসাবে কেন চালু করল? তা ছাড়া ছেলের ভুলে মায়ের পেনশন অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পারে না ব্যাঙ্ক। অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা আসে। ২০১৭ থেকে অনেক মাসের টাকা তুলতে না পারায় সেটাও পরেছিল। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই মহিলা টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। কেন তা করা হয়েছে কারণ দেখাতে এবং পেনশন যাতে তুলতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে।
মণিকাদেবীর দাবি, ওই ব্যাঙ্কে ছেলের সঙ্গে অন্য যৌথ অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেটিও ফ্রিজ় করা হয়েছে। তা নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই। অন্যটি পেনশন অ্যাকাউন্ট। তাঁর শারীরিক সমস্যার জন্য যাতে পেনশনের টাকা ছেলে তুলতে পারে, তাই ‘নো অবজেকশন’ দিয়ে রেখেছেন মাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy