Advertisement
E-Paper

বেঞ্চ নিয়ে দুই পক্ষে তুঙ্গে টক্কর

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করবেন, এ কথা জানার পরে তাল ঠোকাঠুকি শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি দুই পক্ষের মধ্যে। তৃণমূল এই ঘটনাকে ‘রাজনীতি’ বলে অভিযোগ করেছে। তারা জানিয়েছে, সার্কিট বে়ঞ্চের অস্থায়ী ভবনের দরজায় ধর্নাও চালিয়ে যাওয়া হবে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৪
প্রতিবাদে: তৃণমূলের অবস্থান জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

প্রতিবাদে: তৃণমূলের অবস্থান জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করবেন, এ কথা জানার পরে তাল ঠোকাঠুকি শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি দুই পক্ষের মধ্যে। তৃণমূল এই ঘটনাকে ‘রাজনীতি’ বলে অভিযোগ করেছে। তারা জানিয়েছে, সার্কিট বে়ঞ্চের অস্থায়ী ভবনের দরজায় ধর্নাও চালিয়ে যাওয়া হবে। উল্টো দিকে, বিজেপির দাবি, তৃণমূলের নেতারা সংবিধানের রীতিনীতি কিছুই জানেন না। এ সবের বাইরে থেকে কংগ্রেস ও সিপিএমের বক্তব্য, উদ্বোধন নিয়ে রেষারেষি বন্ধ করে দ্রুত সার্কিট বেঞ্চ চালু করার কথা ভাবুক দু’পক্ষই।

বৃহস্পতিবার সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘মোদী উত্তরবঙ্গে আসছেন বলেই সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন কেন্দ্রীয় অনুমোদনের অপেক্ষায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে বেঞ্চ চালু করার যাবতীয় প্রচেষ্টা রাজ্যের।’’ গৌতম মনে করিয়ে দেন, দীর্ঘদিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে আন্দোলনে রয়েছে দল। বেঞ্চের যাবতীয় পরিকাঠামো থেকে শুরু করে সবটাই রাজ্য সরকার তৈরি করেছে। তাঁর দাবি, যেখানে মাত্র একটি সই প্রয়োজন ছিল, তার জন্য পাঁচ মাস দেরি করে কেন্দ্রীয় সরকার শুধু সাধারণ মানুষকেই বিপদে ফেললেন না, মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির পথেও বাধা সৃষ্টি করলেন।

সার্কিট বেঞ্চ দ্রুত চালু করার দাবিতে জলপাইগুড়িতে ধর্না অবস্থানও চলবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “অস্থায়ী ভবনের গেটের সামনে আমরা ধর্না চালিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী এর আগেও চা বাগান খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রাখেননি।” আজ শুক্রবার বিকেলে ধর্না মঞ্চে সমাবেশের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। মোদীর মঞ্চে কী হয়, তা দেখে জলপাইগুড়িতে বিকেলের সমাবেশে পরের কর্মসূচি জানানো হবে বলে খবর। রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকেও সমাবেশে পাঠাতে পারেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

এই বিতর্কে বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘তৃণমূল না বোঝে সংবিধান, না বোঝে আইন। এ তো আর ত্রিফলা নয়, যে গৌতমবাবুরা গিয়ে উদ্বোধন করবেন। বিচার সংক্রান্ত বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় সরকারই দেখে। তাই সেটি প্রধানমন্ত্রীরই উদ্বোধন করার কথা।’’

মুখে যা-ই বলুন, ঘরোয়া আলোচনায় তৃণমূল নেতারা বলছেন, সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা আন্দোলনে জল ঢেলে দিয়েছেন মোদী। রাজ্যকে অন্ধকারে রেখেই সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের বিষয়টি তলে তলে চূড়ান্ত করেই বুধবার তা মন্ত্রিসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন গৌতম। এই পরিস্থিতিতে ধর্না মঞ্চগুলি থেকেই সিবিআই হানা এবং সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে বিজেপি-বিরোধী প্রচার আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “লাগাতার ধর্নার জেরেই বেঞ্চের উদ্বোধন হতে চলেছে, সেই বার্তাও দেওয়া যাবে।”

এই টক্করের বাইরে রয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। এ দিন জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক পিনাকী সেনগুপ্তের কথায়, “দুই সরকারই ভোটের রাজনীতি করছে। রাজ্য আর কেন্দ্রের যুদ্ধে সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনকে আইনি জটিলতার দিকে ঠেলে দিল।” আর শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মমতা এবং মোদী দুজনেই সব কিছু নিয়ে রাজনৈতিক রেষারেষি শুরু করেছেন। এ সব না করে বরং আদালত দিন ঠিক করুক। আমরা চাই, দ্রুত বেঞ্চ চালু হোক।’’

(সহ প্রতিবেদন: শান্তশ্রী মজুমদার)

TMC BJP Politics Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy