Advertisement
E-Paper

দীপার নেতৃত্বে গড় রক্ষা হল ইসলামপুরে

বছরখানেক আগে লোকসভা ভোটে সিপিএম প্রার্থীর কাছে দেড় হাজারের কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন তিনি। পুরসভা ভোটে নিজের ‘খাসতালুকে’ সিপিএমকে খাতাই খুলতে দিলেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। ইসলামপুর পুরসভার ১৭টি আসনের মধ্যে একটি আসনও সিপিএম পায়নি। শুধু বামেরাই নয়, বিপর্যস্ত তৃণমূল শিবিরও। রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর ছেলে পুরভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন।

অভিজিৎ পাল

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৮

বছরখানেক আগে লোকসভা ভোটে সিপিএম প্রার্থীর কাছে দেড় হাজারের কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন তিনি। পুরসভা ভোটে নিজের ‘খাসতালুকে’ সিপিএমকে খাতাই খুলতে দিলেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি।

ইসলামপুর পুরসভার ১৭টি আসনের মধ্যে একটি আসনও সিপিএম পায়নি। শুধু বামেরাই নয়, বিপর্যস্ত তৃণমূল শিবিরও। রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর ছেলে পুরভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। পুরসভা দখল করতে ইসলামপুরে টানা প্রচার চালিয়েছিলেন মন্ত্রী নিজে। যদিও, গতবারের থেকে একটি আসন বাড়িতে তিনটিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তৃণমূল শিবিরকে। ইসলামপুর পুরসভায় ১০টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। তৃণমূল এবং বিজেপি পেয়েছে একটি করে আসন। নির্দল প্রার্থীর দখলে গিয়েছে ১টি আসন।

নিজের খাসতালুকের বিজয়ের খবর পেয়ে এ দিন কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা এসে ইসলসামপুরে পৌঁছন দীপাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘পুরভোটের প্রচারের সময় থেকেই সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছিল। সে কারণে বাসিন্দারা এলাকাতে শান্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। যেখানে বিরোধীরা শক্তিশালী সেখানেই তাঁরা ওই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছেন। ইসলামপুরের কংগ্রেসের বিদায়ী বোর্ডের উন্নয়নের দেখেই সকলে কংগ্রেসের পক্ষে রায় দিয়েছে।’’

ইসলামপুর পুরসভা দখল করা রাজ্যে জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগারমন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর কাছেও ছিল ‘মর্যাদা’র লড়াই। কংগ্রেসের দাবি, সেটা জেনেই দীপাদেবী দীর্ঘদিন আগে থেকেই পাল্টা কৌশল ছকে ফেলেছিলেন। অন্তত মাস দেড়েক আগে বিদায়ী কংগ্রেস চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবালকে দিয়ে দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করিয়ে দেন। প্রচারের শেষ দফায় ইসলামপুরে নিজে টানা প্রচার চালান দীপাদেবী। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, ইসলামপুরের লড়াইটা যাতে তাদের সঙ্গে তৃণমূলের সরাসরি হয়, সে কারণে বাম-বিজেপিকে কড়া আক্রমণের নিশানা করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেই কৌশলে যে তিনি সফল তা সিপিএমের একটি আসন না পাওয়ার ঘটনাই প্রমাণ করেছে। লোকসভা ভোটে বিপুল ভোটে এগিয়ে থেকেও বিজেপি পুরভোটে পেয়েছে তিনটি আসন।

সিপিএমের তরফে অবশ্য এ দিনও দাবি করা হয়েছে, তাদের সংগঠনে কোনও প্রভাব পড়েনি। সিপিএমের ইসলামপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক বিকাশ দাস বলেন, ‘‘অন্য বিরোধীরা প্রচুর টাকা খরচ করেছিল, আমরা পাল্লা দিতে পারিনি বলেই হেরেছি।’’ তৃণমূলের নেতা তথা মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীকে নিজের পাড়ার ওয়ার্ড এবং পাশের যে ওয়ার্ডে তাঁর ছেলে মেহেতাব দাঁড়িয়েছিল সেই দু’টি ওয়ার্ড-সহ তিনটি ওয়ার্ড নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তৃণমূলের তরফে অবশ্য, কয়েকটি ওয়ার্ডে বিরোধীদের মধ্যে তলে তলে জোট হয়েছিল। যদিও কোনভাবেই ইসলামপুর পুরসভায় ‘দীপা-ফ্যাক্টর’ কাজ করেছে বলে মানতে চাননি মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষই একমাত্র ফ্যাক্টর। মানুষ যে রায় দিয়েছেন তা মাথা পেতে নেব।’’ মন্ত্রীর ছেলে তথা তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি মেহেতাব চৌধুরীর দাবি, ‘‘আশা করেছিলাম ১৪টি ওয়ার্ডে জিতব। তবে কোথাও সিপিএম কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে কোথাও আবার বিজেপি কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে। এর ফলে এলাকাতে আমাদের আসন কমেছে।’’ হারের ব্যাখ্যা দিতে বিজেপির ইসলামপুর টাউন সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন অবশ্য গত বছরের পুরভোটের উদাহরণ টেনেছেন। ব্যাখ্যা, ‘‘গত বারের থেকে ফল ভাল হলেও, আসন সংখ্যা কিছুটা কমেছ। তবে এলাকার বাসিন্দারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’

গত লোকসভা ভোটের নিরিখে ইসলামপুর পুরসভার ১৭টির মধ্যে ১৫টি আসনেই এগিয়েছিল। সেখান থেকে বিরোধীদের পর্যদুস্ত করা এবং সিপিএমকে খাতা খুলতে না দেওয়ার কারণ হিসেবে বিদায়ী চেয়ারম্যান কানাইলাল অগ্রবালের জনসংযোগের সঙ্গেই ‘দীপা-ফ্যাক্টর’ কাজ করেছে বলে কংগ্রেসের দাবি।’’ তার জেরেই টানা চার বার ইসলামপুর পুরসভা দখল করল কংগ্রেস।

cong defends islampur deepa dasmunshi islampur municipality vote result islampur congress abhijit pal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy