Advertisement
E-Paper

ফোনে ডেবিট কার্ড ও ওটিপি নম্বর দিয়ে ৪৫ হাজার টাকা খোয়ালেন কংগ্রেস বিধায়ক

মোবাইলে ফোন করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তা বলে পরিচয় দিয়ে কেউ একজন ডেবিট কার্ড ও ওটিপি নম্বর জানতে চেয়েছিল। কোনওরকম দ্বিধা না করেই নম্বর দু’টি জানিয়ে দেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪
মোহিত সেনগুপ্ত, কংগ্রেস বিধায়ক।

মোহিত সেনগুপ্ত, কংগ্রেস বিধায়ক।

মোবাইলে ফোন করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তা বলে পরিচয় দিয়ে কেউ একজন ডেবিট কার্ড ও ওটিপি নম্বর জানতে চেয়েছিল। কোনওরকম দ্বিধা না করেই নম্বর দু’টি জানিয়ে দেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। এর পরেই তিনি খেপে ৪৫ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে!

গত বুধবারের ঘটনা। পরদিনই মোহিত ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ও রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে। পুলিশের দাবি, এটিএম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনও গোপন তথ্য ফোনে কাউকে না জানানোর জন্য তাদের তরফে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের তরফেও গ্রাহকদের নিয়মিত এসএমএস পাঠিয়ে সচেতন করা হয়। কিন্তু এত প্রচার সত্ত্বেও একজন বিধায়ক হয়ে কেনও মোহিত কেন এই ভুল করলেন, সেই প্রশ্নে অবাক তদন্তকারী পুলিশকর্তারা। জেলা কংগ্রেসের নেতাদের একাংশও হতবাক।

মোহিতের দাবি, ফোনের ওপারের ব্যক্তি যে ব্যঙ্ক কর্তা নন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোনে বিশেষ ‘কলার অ্যাপস’ থাকায় যে নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল, সেই নম্বরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের নামও উঠেছিল। তাই এরপর আর কোনও সন্দেহ হয়নি বিধায়কের। এরপর ডেবিট কার্ড ও ওটিপি নম্বর দু’টি জানিয়ে দেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য তিনি নিজে বুঝতে পারেন, ভুল করে ফেলেছেন। তিন দফায় ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫ হাজার টাকা কেটে নেওয়ার এসএমএস পান তিনি। এ ব্যাপারে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, বিধায়কের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে। দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঝাড়খণ্ড অথবা বিহারের এটিএম প্রতারণা-চক্রের কোনও সদস্য ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শনিবার ওই বিধায়কের দাবি, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রায়গঞ্জ ও কলকাতার বিধানসভা শাখায় তাঁর দু’টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ৭ নভেম্বর দুপুর ৩টে নাগাদ তিনি রায়গঞ্জের নেতাজিপল্লি এলাকায় দলের জেলা কার্যালয়ে ছিলেন। সেই সময় একটি অচেনা নম্বর থেকে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে নিজেকে ওই ব্যাঙ্কের অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় ম্যানেজার বলে পরিচয় দেয়। প্রথমে মোহিতের সন্দেহ হলেও কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তি তাঁর দু’টি অ্যাকাউন্টেরই নম্বর বলে দেয়। ওই ব্যক্তি আরও জানায়, বিধায়কের বিধানসভা শাখার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের এটিএম কার্ডটি পুরনো হয়ে গিয়েছে। ওই কার্ডটি এটিএম থেকে পেটিএমে বদলে নিলে মোহিত ব্যাঙ্ক থেকে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাবেন। যাবতীয় সন্দেহ কেটে গিয়ে মোহিত ওই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।

এর পরেই ওই ব্যক্তি বিধায়কের এটিএম কার্ডটি পেটিএম কার্ডে বদলানোর নাম করে কৌশলে তাঁর এটিএম কার্ডের নম্বর জেনে নেয়। কিছুক্ষণ পর মোহিতের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ওটিপি নম্বর আসে। মোহিতকে ফোন করে সেই নম্বরও জেনে নেয় সে। এর পরেই মোবাইলে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তিন দফায় ৪৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার এসএমএস পান মোহিত।

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের দাবি, ‘‘ঘটনার সময়ে আমি মোহিতবাবুকে কাউকে ফোনে ব্যাঙ্ক ও এটিএম সংক্রান্ত গোপন তথ্য না জানানোর অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্কের কর্তা ফোন করেছেন বলে দাবি করে মোহিতবাবু ওই দুষ্কৃতীকে সেই সব তথ্য জানিয়ে দেন।’’

Bank Fraud MLA Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy