অশান্ত বাংলাদেশে প্রাণসংশয়ে ভুগছেন রাজনীতিকেরা। দলমত নির্বিশেষে ১৫ জন রাজনীতিক আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্স বা নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানানো হয়েছে সে দেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’-র একটি প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনেই জানানো হয়েছে, আবেদনগুলি খতিয়ে দেখতে চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, দেহরক্ষী কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন ২৫ জন সরকারি আধিকারিকও। যে সমস্ত নেতা নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, জামাত নেতা আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি অলি আহমদ।
নাম প্রকাশ না-করার শর্তে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা ‘প্রথম আলো’-কে জানান, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার পর নিরাপত্তা চেয়ে রাজনীতিবিদদের আবেদন ও খোঁজখবর নেওয়া বেড়েছে। তবে তার আগেও কয়েক জন নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই কর্তা। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, অপব্যবহারের আশঙ্কায় আগ্নেয়াস্ত্রের ঢালাও লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা নেই সরকারের। তাই প্রয়োজনীয়তা বুঝেই লাইসেন্স দিতে চাইছে তারা।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। তাঁকে সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। ছ’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে। হাদির হত্যাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলায় বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় ঝলসে মৃত্যু হয়েছে বেলালের সাত বছরের শিশুকন্যার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেলাল এবং তাঁর আরও দুই নাবালিকা কন্যা। সোমবার বাংলাদেশের খুলনায় নাহিদ ইসলামের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতা মহম্মদ মোতালেব শিকদারকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক নেতার উপর হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল। তাই নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেরাই করতে চাইছেন সে দেশের বহু নেতা।