Advertisement
E-Paper

‘৪৫০ টাকা দিয়ে ক্যুরিয়ার করে চোর অপবাদ পেলাম’! সাত বছর আগে অর্ধেন্দুর নথি নিয়ে গিয়েছিলেন প্রাক্তন স্ত্রী

গত ২৭ ডিসেম্বর বাড়ির ঠিকানায় একটি পার্সেল পেয়েছিলেন অর্ধেন্দু। খুলে দেখেন ৭ বছর আগে বাড়ি থাকা চুরি যাওয়া দুটো ফাইল। তার মধ্যে তাঁর স্কুল-কলেজের যাবতীয় শংসাপত্র, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৩৬
Cooch Behar Parcel Case

সাত বছর আগে ‘চুরি’ যাওয়া নথি পেয়েছেন ডাকযোগে। সেই পার্সেল হাতে কোচবিহারের অর্ধেন্দু বণিক। —নিজস্ব ছবি।

রাগের চোটে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে চেয়েছিলেন। জিনিসপত্র গোছগাছের সময় স্বামীর ফাইলপত্র ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলেছিলেন। তার পর ৭ বছর কেটে গিয়েছে। বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে দম্পতির। এসআইআর আবহে প্রাক্তন স্বামীকে ডাকযোগে সেই সমস্ত নথি ফেরত পাঠিয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু প্রাক্তন স্বামীর কাছে ‘চোর নথি ফিরিয়ে দিয়েছে’ শোনার পরে মর্মাহত হয়েছেন কোচবিহারের পরিবেশকর্মী অর্ধেন্দু বণিকের প্রাক্তন স্ত্রী।

গত ২৭ ডিসেম্বর বাড়ির ঠিকানায় একটি পার্সেল পেয়েছিলেন অর্ধেন্দু। খুলে দেখেন ৭ বছর আগে বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া দুটো ফাইল। তার মধ্যে তাঁর স্কুল-কলেজের যাবতীয় শংসাপত্র, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল। সাত বছর ধরে যে কাগজপত্র হন্যে হয়ে খুঁজেও পাননি, হঠাৎ বাড়ির দরজায় সে সব পৌঁছেছে দেখে বিস্মিত হয়ে যান যুবক। সোমবার থানায় গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, চুরি যাওয়া জিনিস ডাকযোগে ফেরত পেয়েছেন। তিনি জানান, এসআইআর আবহে সমস্যায় পড়তে পারেন, এই ভেবেই হয়তো ‘মানবিক চোর’ সব ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু চোর কে তা জানার কৌতূহল ছিল তাঁর। সোমবার আনন্দবাজার ডট কম-এ ওই খবর দেখে ‘মর্মাহত’ অর্ধেন্দুর প্রাক্তন স্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আমি ওর বাড়ি ছাড়ি। ব্যাগ গোছানোর সময় ফাইলপত্রগুলো ভুল করে ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলেছিলাম।’’ তিনি বলে যান, ‘‘এর পর আমাদের ডিভোর্সের মামলা চলতে থাকে আদালতে। তাই এই বিষয়গুলো তুলে ধরিনি। কিন্তু কিছু দিন আগে আমার মনে হয়েছে, এই কাগজপত্র ওকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। তাই এক বন্ধুর সহযোগিতায় অন্য নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অর্ধেন্দুর কাছে পার্সেল আমিই পাঠিয়েছি। এসআইআর বা অন্য কোনও কিছু ভেবে পাঠাইনি। যার জিনিস তাকে দিয়ে দেওয়া ভাল, এই ভেবেই করেছি। সেই আমি হলাম কিনা চোর! তা ভাল।’’

অর্ধেন্দুর ঠিকানায় পার্সেল পাঠানোর সময় নিজের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করেননি প্রাক্তন স্ত্রী। তিনি চান না নাম-ঠিকানা জানুন প্রাক্তন স্বামী। জানলে আবার পারিবারিক অশান্তি হতে পারে এই ভেবে। যুবতী বলেন, ‘‘অন্যের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে আমিই ক্যুরিয়ার করেছি। ৪৫০ টাকা খরচ করে ক্যুরিয়ার করে চোর অপবাদ নিলাম।’’

প্রাক্তন স্ত্রী পার্সেল করেছেন শুনে অর্ধেন্দুর মন্তব্য, ‘‘কারও অবর্তমানে তাঁকে না জানিয়ে তাঁর জিনিস নিয়ে চলে যাওয়াটাকে চুরিই বলে, সেটা যেই হোক না কেন। যখন এই কাগজপত্র পাচ্ছিলাম না, তখন ওকে জিজ্ঞাসা করেছি। অস্বীকার করেছে। তা ছাড়া কাগজপত্রগুলো আলমারিতে তালাবন্ধ অবস্থায় ছিল। সেগুলো কী ভাবে ভুল করে নিয়ে গেল!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের ডিভোর্সের সময় ওকে অনেক বার জিজ্ঞাসা করেছিলাম। ও আমাকে প্রতিবারই ‘না’ বলেছিল। এমনকি, ডিভোর্সের সময় আদালতে দাঁড়িয়েও বলে আমার কোনও নথি নেয়নি।’’

প্রাক্তন স্ত্রীকে পরিবেশকর্মীর হুঁশিয়ারি, ‘‘আজ যখন কাগজপত্র আমায় ও-ই ফেরত দিল বলে বলছে, তা হলে আমি মামলাও করতে পারি। এই নথিপত্রের জন্য কত সমস্যায় পড়েছি!’’

Cooch Behar Parcel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy