Advertisement
E-Paper

রোজগার কোথায়, ফিরে যাচ্ছেন পরিযায়ী

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত সরকারি হিসেবেই প্রায় পাঁচ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। যাঁদের অধিকাংশই লকডাউনে বাড়ি ফিরেছেন।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:১৩
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কোভিড আবহে ফিরে এসেছিলেন সবাই। মুখে একটিই কথা ছিল: এখানে কাজের ব্যবস্থা হলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা আর ফিরবেন না ভিন্ রাজ্যে। প্রশাসনের তরফেও দেওয়া হয়েছিল কাজের আশ্বাস। তার পর মাসের মাস কেটে গিয়েছে। কেউ কেউ একশো দিনের কাজ পেয়েছেন। কেউ তা-ও পাননি। যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের দাবি, ওই টাকায় সংসার চলে না। তাই আবার কোচবিহার থেকে মালদহ— গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই শ্রমিকদের ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার টান শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে শিলিগুড়ি এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দিনে তিনি পাঁচ জেলাকে নিয়ে যে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন, সেখানে এই প্রসঙ্গও উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে এক সরকারি আধিকারিক বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের জন্য নানা চেষ্টা করা হয়েছে। একশো দিনের কাজও দেওয়া হয়েছে অনেককে। তার বাইরে কিছু করার ছিল না।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত সরকারি হিসেবেই প্রায় পাঁচ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। যাঁদের অধিকাংশই লকডাউনে বাড়ি ফিরেছেন। কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ সাইকেল-গাড়িতে চেপে ফিরেছেন। কোচবিহারেই এই সংখ্যাটা প্রায় দু’লক্ষ। কোচবিহার প্রশাসন জানিয়েছিল, প্রায় সব শ্রমিককেই একশো দিনের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হয়েছিল, যাঁরা ওই শ্রমিকদের কাজের জন্য প্রকল্প তৈরি করে দেন। শ্রমিকদের কারা কোন কাজে দক্ষ, তার তালিকাও তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু শেষ অবধি সব সেই তিমিরে। কোচবিহারের নাজিরহাটের বাসিন্দা সাগর বর্মণ জানান, তিনি বাড়ি ফেরার পরে কোনও কাজ পাননি। তাই ঝুঁকি নিয়েই ফের কাজের খোঁজে দিল্লি পাড়ি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “টাকা না থাকলে বেঁচে থাকব কি করে? তাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলে এসেছি।”

মালদহেও একই অবস্থা। সরকারি হিসেবে মালদহে ১ লক্ষ ৪০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছিলেন। বেসরকারি হিসেবে ওই সংখ্যা আরও বেশি। গত এক মাস ধরে তাঁরা ফের ফিরতে শুরু করেছেন। বাসিন্দারা জানান, ভিন্ রাজ্যে কারখানা খোলার পরে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। সেই সময় অতিরিক্ত পারিশ্রমিকের কথা বলে শ্রমিকদের বিমানেও নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। কালিয়াচক, মানিকচক, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, হবিবপুর, বামনগোলা থেকে প্রচুর শ্রমিক ফিরে গিয়েছেন। মানিকচকের নুরপুরের বাসিন্দা রাজু হালদার জানান, তাঁরা অনেকে একসঙ্গে ভিন্ রাজ্যে ফিরেছেন। তিনি বলেন, “না ফিরে কোনও উপায় ছিল না। হাত পুরো ফাঁকা।” কালিম্পং-দার্জিলিঙে ফিরেছিলেন ৪৪ হাজার শ্রমিক। তাঁদের কারও কোনও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়নি। সবমিলিয়ে এখন পর্য়ন্ত লক্ষাধিক কৃষক ফের ফিরেছেন ভিনরাজ্যে। বাকিরা এখনও তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে আসায় কিছুটা হলেও আশা তৈরি হয়েছে বাকি পরিযায়ীদের মনে।

(তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত সেন)

Migrant Labourer North Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy