Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in North Bengal

কেন্দ্রীয় দল ঘরেই রইল সারা দিন

কেন্দ্রীয় দলের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

রানিডাঙা এসএসবি ক্যাম্পের সামনে পাহারায় পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

রানিডাঙা এসএসবি ক্যাম্পের সামনে পাহারায় পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৭:১৭
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় করোনা পরিস্থিতি দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দলটি মঙ্গলবার দিনভর কাটাল রানিডাঙার এসএসবি গেস্ট হাউজে।

পাঁচ সদস্যের ওই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব বিনীত জোশী, জন স্বাস্থ্য দফতরের শিবানী দত্ত, অজয় গঙ্গোয়ার, ধর্মেশ মাকওয়ানা, এনবি মানি। সোমবার তাঁরা দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে বাগডোগারায় নামেন। মনে করা হয়েছিল, এ দিন তাঁরা জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের কোথাও না কোথাও যাবেন। কিন্তু শেষ অবধি যাবতীয় জল্পনা দিনভর ঝুলিয়ে রেখে গেস্ট হাউজেই রয়ে গেলেন তাঁরা।

কেন্দ্রীয় দলের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। জিটিএ প্রধান অনীত থাপারও প্রশ্ন, ক’দিন আগে যেখানে পাহাড়ের দুই জেলার পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক বলল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক, তার পরে হঠাৎ কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের দল পাঠাল? এর ফলে চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয় বলে দাবি তাঁর। কলকাতাতেও এই বিশেষ দলের সফর নিয়ে টানাপড়েন চলে দিনভর। শেষে কলকাতার দলটি বিকেলে এলাকা পরিদর্শনে বার হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গের দলটি আর বার হয়নি।

কেন্দ্রীয় দলের অপেক্ষায় দিনভর রানিডাঙা ছাউনির বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন রাজ্য পুলিশের লোকজনও। এক সময়ে শোনা যায় এ দিন দলটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ঘুরে দার্জিলিং এবং কালিম্পং যাবে। জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা শিলিগুড়ি পুর এলাকার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগর এলাকাতেও যাওয়ার কথা। কালিম্পঙের বাসিন্দা যে মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁর বাড়ি রয়েছে ওই এলাকায়। সেখানে তাঁর পরিবারের চার সদস্য আক্রান্ত হয়েছিলেন। কালিম্পঙে আক্রান্ত হয়েছিল পরিবারের ছ’জন। তবে সকলেই এখন সুস্থ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরও কেন্দ্রীয় দলটির গতিবিধি নিয়ে কিছু জানেন না বলে জানায়।

দুপুর পর্যন্ত প্রতিনিধি দলের একটি সূত্রে জানা যায়, সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। কখন, কোথায় তারা যাবেন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিকেলে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন সাহায্য করছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে রাজ্যকে কড়া চিঠিও দেওয়া হয়। বিকেলে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, উত্তরবঙ্গে যে দলটি রয়েছে, তার নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশীকে তাঁরা সমস্ত তথ্য দিয়েছেন। তাঁরা কোথাও যেতে চাইলে তা রাজ্য ভেবে দেখবে। মুখ্যসচিব জানান, ১০টি জেলায় যেখানে অল্প কয়েকটি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা রয়েছে। সেই সব জায়গায় গত ১৫ দিন ধরে কোনও নতুন সংক্রমণও ঘটেনি।

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল আসা নিয়ে উত্তরবঙ্গেও শাসক, বিরোধী তরজা চলছে। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘যা বলার কলকাতায় দলের পক্ষে বলা হয়েছে। এক দিকে ভুল কিট পাঠিয়েছে কেন্দ্র। আর, কেন্দ্রীয় দল রাজ্যকে সাহায্য করার জন্য আসেননি। বরং কোভিড-১৯ নিয়ে তারা রাজনীতি করতে চাইছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আলোচনা না-করে এ ভাবে কাজ করা যায় না।’’ জলপাইগুড়িতে হোম কোয়রান্টিনে থাকা বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল এসেছে যখন, সাহায্য করা দরকার। অন্য রাজ্য কেন্দ্রীয় দলকে কাজ করতে দিচ্ছে, তা হলে এখানে কেন করতে দেবে না? আসলে নিজেদের দোষ বেরিয়ে পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in North Bengal Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE