করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের গোড়ায় শয্যার অভাব ঘটেছিল। ছিল অক্সিজেনের অভাবও। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করল উত্তরবঙ্গ। বিশেষ করে সেই ঢেউয়ের সঙ্গে ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের ধাক্কাও লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সব কিছু মাথায় রেখে কয়েকটি বিষয়ের উপরে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। তার মধ্যে শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বাড়তি চিকিৎসক, সবই রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, তৃতীয় ঢেউতে কম বয়সী এবং শিশুরা বেশি আক্রান্ত হতে পারে। তাই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শিশুদের চিকিৎসার শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে যাতে তাদের মায়েরাও থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে অনেক জায়গায়। মায়েদের দ্রুত টিকারও ব্যবস্থা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিক থাকলে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে শিশুদের জন্য শয্যার ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের জন্য ২১৭ জন চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে। তার মধ্যে জনা ৩৫ চিকিৎসক নিয়োগ হয়েও গিয়েছে। নার্সিং স্টাফ অবশ্য পর্যাপ্ত রয়েছে বলেই জানান জনস্বাস্থ্য বিভাগের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা ওএসডি সুশান্ত রায়ের। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি জেলাতেই কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো দ্রুত তৈরি হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বড়দেরও চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে। যে চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে, জুলাইয়ের মধ্যেই তাঁদের সব নিয়োগ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’
স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই জানা গিয়েছে, জেলা হাসপাতালগুলিতে ২০টি করে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু), অর্থাৎ সব মিলে ১৬০টি শয্যা করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের চারটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩০টি করে মোট ১২০টি পিকু শয্যা থাকবে। জেলা এবং মহকুমা হাসপাতালে এসএনসিইউ-তে ৬টি করে শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫০টি শয্যা করা হচ্ছে। এই সমস্ত শয্যা আইসিইউ স্তরে চিকিৎসার জন্য। এ ছাড়া কোভিড শয্যাতেও শিশুরা থাকতে পারবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৩৬০টির মতো কোভিড শয্যা রয়েছে। ৩০টির মতো ইটেনসিভ কেয়ার ইউনিট রয়েছে। প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আরও ১০০টি শয্যা বাড়ানো যাবে। জলপাইগুড়ি জেলায় সব মিলিয়ে ৬৪০টি কোভিড শয্যা রয়েছে। প্রয়োজনে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের কোভিড হাসপাতালে আরও ২০০টি শয্যা বাড়ানোর পরিকাঠামো করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাই আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কালিম্পঙে এই সংক্রান্ত কাজ চলছে।