এক মাসেরও বেশি ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন ওঁরা তিনজন। ঠিক ছিল, ২২ ফেব্রুয়ারি ফিরে যাবেন ইউনিভার্সিটিতে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের খবরের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চিনের সিনজিয়াং মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি। বৃহস্পতিবার ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এই খবর দেওয়ায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কোচবিহারের দুই ছাত্র। দু’জনেই মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া।
গত ১৭ জানুয়ারি ছুটিতে বাড়ি ফিরেছেন ওঁরা দু’জন এবং বীরভূমের বাসিন্দা তাঁদের আর এক সহপাঠী। বৃহস্পতিবার মোবাইলে কর্তৃপক্ষ তাঁদের মেসেজ করে ইউনিভার্সিটি বন্ধের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি, ফেরার টিকিট কেটে থাকলে তা বাতিল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারের মাথাভাঙা শহরের ওই দুই ছাত্রের নাম ইমরান আল ফায়েদ এবং সৌম্যজিৎ বর্মণ। শুক্রবার তাঁরা জানালেন, ইউনিভার্সিটি আপাতত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরের কাউকে ক্যাম্পাসের ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিতর থেকেও কাউকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। কবে তাঁরা ফের যেতে পারবেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
ওই দুই ছাত্রের বাড়ি ফেরার কথা জানতে পেরেই এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল সেখানে যায়। দুই ছাত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ওই দু’জন ছাত্র পুরোপুরি সুস্থ। কোচবিহারের সিএমওএইচ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ওই দুই ছাত্রের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁরা পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন।” ইমরানের বাবা মজিরুল হোসেন বলেন, “ছেলে সুস্থ রয়েছে। কোনও অসুবিধে নেই। তবে ইউনিভার্সিটি কবে খুলবে তা নিয়ে একটা চিন্তা তো রয়েছেই। ওইদিকের পরিস্থিতি নিয়েও একটা চিন্তা হচ্ছে।”
এদিকে, বাসিন্দাদের একটি অংশের বক্তব্য, গত ১৭ জানুয়ারি ওই দুই পড়ুয়া ফিরেছেন। তখনই তাঁদের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল প্রশাসনের। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, চিন থেকে কেউ ফিরছে কি না তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। রাজ্যের নির্দেশে তার একটি তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রের খবর, এক বছর আগে ওই মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন ইমরান ও সৌম্যজিৎ। তাঁদের সঙ্গে বীরভূমের রেহান মণ্ডলও সেখানে পড়তে যান। ইমরান এ দিন জানান, পরীক্ষার পরই সাধারণত ছুটি হয় তাঁদের। ছুটির পর গত ১০ জানুয়ারি তাঁরা সেখান থেকে ভিয়েতনামে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ১৭ জানুয়ারি বাড়ি ফেরেন তাঁর। সিনজিয়াং ফেরার জন্য টিকিট কেটেও রেখেছিলেন সবাই। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পরে টিকিট বাতিল করে দেন। ইমরান বলেন, “আমরা বাড়িতে ফেরার কিছুদিন পরে ওই ভাইরাসের কথা জানতে পারি। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করেন।” তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধের পর থেকে পুরোপুরি কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।