জলে-ডাঙায়: শুভানিটোলায় কুমির, নেওড়াভ্যালিতে বাঘ। নিজস্ব চিত্র
রোজকার মতো শনিবারও শুভানিটোলার চরে চাষ করতে গিয়েছিলেন জাকির হোসেন। সঙ্গে পড়শি শাহজাহান আর জামালউদ্দিন। অশোকটোলার বাড়ি থেকে পঞ্চানন্দপুর পলাশগাছি ঘাট থেকে নৌকায় চেপে তাঁরা পৌঁছে যান সেই চরে।
এ দিন সেখানেই চমক অপেক্ষা করছিল জাকিরের জন্য। কয়েক মুহূর্ত সময় পেয়েছিলেন তিনি। তাতে নিজের মোবাইলে দুটো ছবিও তোলেন। কিন্তু তার পরই রোদ পোহানো সেই কুমির দাঁত খিঁচিয়ে তাড়া করলে চোঁ চাঁ দৌড় মারেন তিনি।
কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা নদী। নদীর ভাঙাগড়ার জেরে এখন মাঝগঙ্গায় অন্তত ২০ থেকে ২৫টি চর গজিয়ে উঠেছে। এই চরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পিয়ারপুর, শুভানিটোলা, গোলঢাব, পলাশগাছি, পরানপুর, খাট্টিটোলা, কলকাতা বাজার প্রভৃতি। ওই সব চরে চাষাবাদ যেমন হয়, তেমনি গঙ্গা ভাঙনে ভিটেমাটি হারানো অনেক বাসিন্দা এখন ফের সেই চরেই বসবাস শুরু করেছেন। গঙ্গা ভাঙনের শিকার হওয়া কৃষক জাকির হোসেন এখন পঞ্চানন্দপুরের অশোকটোলায় থাকেন। তাঁর চাষাবাদের জমি রয়েছে সেই শুভানিটোলা চরে। তাঁর মতো অনেকেই রোজ স্থানীয় পঞ্চানন্দপুর পলাশগাছি ঘাট থেকে নিজেদের ডিঙি নৌকা করে শুভানিটোলা চরে যান চাষের কাজে।
জাকির বলেন, এ দিনও তিনি সকাল ১০টায় তাঁরা শুভানিটোলা চরে যান। নৌকায় থাকতেই তাঁর জমি সংলগ্ন চর ও নদীর জলের মাঝে কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু একা সেখানে যেতে সাহস পাননি। তাই নৌকা থেকে নেমে শাহজাহান ও জামালউদ্দিনকে নিয়ে তিনি সেখানে যান। কাছে গিয়ে তো চক্ষু ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। দেখেন, রোদ পোহাচ্ছে একটা কুমির।
জাকির পরে বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুর্দার মুখে শুনেছি যে, গঙ্গায় কুমির আছে। কিন্তু কোনও দিন চোখে দেখিনি।’’ সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে দু’টি ছবি তুলতেই মুখ ফেরাল কুমির। তেড়ে আসতেই দে ছুট।
জাকির বলেন, ‘‘অনেকটা দূরে ছিলাম, তাই রক্ষে।’’ দৌড়ে বেশ কিছুটা এসে ফের পিছন ফেরেন তিনি। কিন্তু সে তখন আর নেই। হয়তো নদীতে নেমে গিয়েছে। জাকিরের কথায়, এখনও আতঙ্কে বুক ঢিবঢিব করছে।
বাকিদের এখনও আফসোস, তাঁরা ‘মিস’ করে গেলেন কুমিরকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy