Advertisement
E-Paper

ঠান্ডায় লঙ্কার জল খাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ, হাঁটছেন গৌতম

সভা-মিছিলে তাঁদের জনসংযোগ চলছেই। মন্ত্রী-মেয়র-চেয়ারম্যান হলে তো কথাই নেই। ব্যস্ততা আরও কয়েক গুণ। সরকারি কাজ, দলের কাজ, ছোটাছুটির বিরাম নেই। বাসিন্দাদের দাবি, চলতি বছর উত্তরবঙ্গের শীত হাড়ে কামড়ে বসিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৭

কুয়াশা ঢাকা সকালে সভার মাঠে ভিড় না জমুক, হিম পড়া সন্ধেয় পথসভায় তেমন লোক হোক বা নাই হোক, নেতাদের তো আর বাড়িতে বসে থাকলে চলবে না। সভা-মিছিলে তাঁদের জনসংযোগ চলছেই। মন্ত্রী-মেয়র-চেয়ারম্যান হলে তো কথাই নেই। ব্যস্ততা আরও কয়েক গুণ। সরকারি কাজ, দলের কাজ, ছোটাছুটির বিরাম নেই। বাসিন্দাদের দাবি, চলতি বছর উত্তরবঙ্গের শীত হাড়ে কামড়ে বসিয়েছে। আবহাওয়া দফতরও বলছে, তাপমাত্রার পতনে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার। কনকনে উত্তুরে হাওয়া তো রয়েইছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটতে থাকা নেতা-মন্ত্রী-মেয়ররা কী বলছেন? কর্মসূচি কাঁটছাট করলেন নাকি বদল আনলেন পোশাক-খাদ্যাভাসে?

সকালে ফ্যানভাত

সকালে বিছানা ছেড়ে লঙ্কা ভেজানো বাসি জল খাওয়া বরাবরের অভ্যাস। শীতের জুবুথুবু সকালেও তার ব্যতিক্রম হয় না উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। দলের কাজ সেরে যত রাতেই ফিরুন না কেন লঙ্কা ভিজিয়ে রাখতে ভুল হয় না তাঁর। কনকনে শীতেও ভোর বেলায় উঠছেন। লঙ্কা ভেজানো জল খাচ্ছেন। তারপরেই খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে বসে পড়ছেন জনতার দরবারে। ঠান্ডার জন্য গায়ে প্রয়োজন পড়লে দু’টো সোয়েটারও চাপিয়ে নিচ্ছেন। সারাদিন একের পর এক অনুষ্ঠানে ছুটে বেড়ানোর পরে রাতে বাড়ি ফেরেন। সকালে কিছু কাজ সেরে নিয়ে ফ্যানভাত খাচ্ছেন ইদানিং। রবিবাবুর কথায়, ‘‘শীতের দিনে খাওয়ার বিষয়ে সাবধানতা তো নিতেই হয়। কনকনে ঠান্ডায় সারাদিন কাজ করতে হয় তাই সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ফ্যানভাত খেয়ে নিচ্ছি। সারাদিন শরীর গরম থাকে।’’

টুপি-মাফলারে গৌতম

উত্তরবঙ্গ উৎসবের ম্যারাথন উদ্বোধনে সকাল সাড়ে ৬টায় মঞ্চে পৌঁছতে হয়েছিল পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। তখনও অনেকেই আসেননি। টুপি-মাফলার জড়িয়ে গাড়ি থেকে নামলেন গৌতমবাবু। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে বসে আঁকো শুরু দুপুর ১টায়। গৌতমবাবু এসেছিলেন সকাল দশটায়। তখন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠে কুয়াশা। কিছুক্ষণ মঞ্চে থাকতে থাকতেই কড়া রোদ। মাফলার, কোটে ঘামতে থাকলেন মন্ত্রী। বিকেলের পরে যখন মাঠ থেকে বের হচ্ছেন তখন আবার কনকনে হাওয়া। আবহাওয়ার এই হঠাৎ ভোলবদলকে কাবু করতে হাঁটার দাওয়াই বাতলালেন পর্যটন মন্ত্রী। বললেন, ‘‘শীতের দিন বলে তো কর্মসূচি ছোট করতে পারব না। আবার শরীরকেও ঠিক রাখতে হবে। তাই প্রতিদিন হাঁটার চেষ্টা করছি। গত রবিবার তো ম্যারাথনের পরে শিলিগুড়ি রাস্তায় প্রায় ৫ কিলোমিটার হাঁটলাম।’’

রাতে রুটি, বাদ আমিষ

পেশার সুবাদেই শরীরচর্চা দীর্ঘ দিনের অভ্যাস ছিল। আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী হওয়ার পরেও সেই অভ্যাস বদলাননি জেমস কুজুর। ভোর সাড়ে ৫টায় উঠে বাড়ির বাগানেই ব্যায়াম করেন। এ বার ঠান্ডা বাড়াবাড়িতে শরীর নিয়ে কিছুটা আশঙ্কায়। বলছেন, ‘‘ব্যায়াম কিছুটা বাড়িয়েছি। শীত বাড়ায় রাতে রুটি খাচ্ছি।’’ খাদ্যাভাসের সঙ্গে শীতে সতেজ থাকার সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন। কাজের জন্য প্রায় দিনই জঙ্গলে যেতে হয়। তাতে ঠান্ডাও লাগে বেশি। বিনয়বাবু বললেন, ‘‘গরম পোশাকের ওপরে তো ভরসা করতেই হচ্ছে। তবে আপাতত হালকা খাবার খাচ্ছি। মুসুর ডাল-বেশি করে সব্জি। আমিষ এখন বাদ।’’

টুপি পরছেন মেয়র

ওয়ার্ড পরিদর্শন ছিল, সঙ্গে আবার দলের সম্মেলনের প্রস্তুতিতে পুরো মহকুমা চষে ফেলেছেন। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য কিন্তু নিয়ম করেই ভোর বেলা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন, ফিরছেন রাতে। ফল হল কাশি-সর্দি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর দু’বার ভুগেছেন অশোকবাবু। শেষে টুপি পরা শুরু করেছেন। মেয়রের কথায়, ‘‘মাথা-কান ভালভাবে ঢাকা থাকলে ক্ষতি কম হয়। বাইরে বের হলে ঠান্ডা তো লাগবেই, মাঝেমধ্যে কাঁপুনিও হতে পারে। তবে টুপি পরা থাকলে আবার কাশি-সর্দির কবলে পড়তে হবে না।’’

সঙ্গে থাকে মায়ের টোটকা

পাঞ্জাবি বা শার্ট গায়ে যাই থাকুক না কেন, গরম পোশাক বলতে হাফ জ্যাকেট। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকে অনেকটাই ছোটাছুটি করতে হয় রোজ। এই শীতে ঠিক থাকতে তাঁর ভরসা ‘মায়ের টোটকা’। প্রতিদিন স্নান করতেই হবে। এবং তা দুপুর বারোটার আগে। আগে সরষের তেল মাখা চাই। খাঁটি সরষের তেল দিতে হবে নাকে, বুকে। সন্ধেবেলায় দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, তুলসী, মধু দিয়ে ফোটানো পানীয়।

Winter Daily Routine Rabindra Nath Ghosh Goutam Deb Ashok Bhattacharya Sourav Chakraborty TMC CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy