Advertisement
০৭ মে ২০২৪

পদে বেঁধে রোখার চেষ্টা

জেলা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম, শ্যামল সাহা, আমজাদ মণ্ডল এবং মিঠু জোয়ারদারের মতো বিপ্লব-ঘনিষ্ঠেরা এ দিন দিল্লি যাননি। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ওই চারজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অঙ্গীকার করায় শেষ মুহূর্তে তাঁরা দিল্লি যাননি।

 উল্লাস: চলছে আবির মাখানো। সোমবার বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র

উল্লাস: চলছে আবির মাখানো। সোমবার বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র

নীহার বিশ্বাস 
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলে বড়সড় ভাঙনের আশঙ্কা তৃণমূলে। এই ভাঙন রুখতে এখন কালঘাম ছুটছে তৃণমূলের নবনির্বাচিত জেলা সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষের। দিনকয়েক ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন অর্পিতা। তাঁর এই আপ্রাণ চেষ্টায় কাজও হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। শেষ মুহূর্তে বিপ্লবের সঙ্গে দিল্লি যাওয়ার টিকিট বাতিল করেছেন জেলা পরিষদের বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ চার সদস্য। যদিও তা সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত জেলা পরিষদ ধরে রাখতে পারছে না তৃণমূল।

জেলা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম, শ্যামল সাহা, আমজাদ মণ্ডল এবং মিঠু জোয়ারদারের মতো বিপ্লব-ঘনিষ্ঠেরা এ দিন দিল্লি যাননি। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ওই চারজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অঙ্গীকার করায় শেষ মুহূর্তে তাঁরা দিল্লি যাননি। তাঁদের কয়েকজনকে ব্লক সভাপতি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাতেই ঠেকানো গিয়েছে ভাঙন। আমজাদ কলকাতা থেকে ফিরে এসেছেন এবং রফিকুল দিল্লির টিকিট বাতিল করেছেন। রফিকুল ও আমজাদ অবশ্য জানান, পদের জন্য নয়, দলের সঙ্গেই তাঁরা ছিলেন, আছেনও। পাশাপাশি, গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর পুরসভার পুরপ্রধান, কাউন্সিলরদের বিভিন্ন পদের টোপ দিয়ে আপাতত দলবদল আটাকানো গিয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, এ দিন দাদা বিপ্লবের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছিলেন তাঁর ভাই তথা গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্রও। তিনিও দাদার পথ ধরবেন বলে কয়েকদিন ধরে জল্পনা চলছিল। তাই এ দিন তিনিও যোগ দেবেন বলে শোনা যাচ্ছিল। শেষপর্যন্ত তিনি যোগ দেননি। শোনা যাচ্ছে, বিপ্লবেরা জেলায় ফিরলে এই দুই পুরসভাই বিজেপির দখলে চলে যাবে। যদিও এ দিন অর্পিতার দাবি, জেলা পরিষদ থেকে পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তাঁদের সঙ্গেই আছেন। অর্পিতা বলেন, ‘‘জেলা পরিষদ আমাদের দখলেই থাকবে।’’ তাঁর বক্তব্য, যাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে, জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেকেই জেলায় ফিরে দলেই থাকবেন বলে অর্পিতার দাবি।

তবে অন্য জল্পনাও শোনা যাচ্ছে জেলায়। স্থানীয় তৃণমূলেরই একটা অংশের খবর, বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ যেসব জেলা পরিষদ সদস্য দিল্লি যাননি, বিপ্লব জেলায় ফিরলেই তাঁরা বিজেপিতে ভিড়ে যাবে। কাজেই অর্পিতার এই ভাঙন রোখার প্রয়াস কার্যত ব্যর্থ চেষ্টা বলে দাবি ওই অংশের।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে জেলায় তৃণমূল নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।’’ যদিও ভাবছেন না অর্পিতা। তিনি বলেন, ‘‘যারা যাওয়ার তাঁরা চলে গেলেও দলের ক্ষতি হবে না। নিষ্ঠাবানদের নিয়ে নতুন করে সংগঠন তৈরি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Biplab Mitra Arpita Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE