E-Paper

সহজে সান্দাকফু, পরামর্শে প্রশাসন 

পাহাড়ের গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) তরফে নতুন বছরের শুরুতেই মানেভঞ্জনে হেলথ ডেস্ক এবং টিম তৈরির জন্য তদ্বির করা শুরু হয়ে গিয়েছে।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১৮
বরফে ঢাকা সান্দাকফু।

বরফে ঢাকা সান্দাকফু। —ফাইল চিত্র।

এক বছরে তিন জনের মৃত্যু। গত সপ্তাহে সান্দাকফু ঘুরতে এসে অসুস্থ হয়ে মারা যান কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা ৬৫ বছরের এক প্রবীণ। চলতি বছরে শুরুর দিকে উত্তর দিনাজপুরের এক যুবক সান্দাকফুতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যান। গত সপ্তাহেই তিন সহকর্মীর সঙ্গে সান্দাকফু ঘুরে টুমলিংয়ে পৌঁছে দক্ষিণ দমদমের এক যুবতীর মৃত্যু হয়। পাশাপাশি, প্রায়শই অসুস্থ হয়েছেন বা হচ্ছেন অনেক পর্যটকই। তাই কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়িয়ে শরীর সুস্থ রেখে কী ভাবে সান্দাকফু ঘোরা যায় বা ট্রেক করা যায় তা নিয়ে এ মাসের শুরুতে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে নতুন সরকারি ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

এর সঙ্গে জুড়তে চলেছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং চিকিৎসার কিছু পরিকাঠামোগত ব্যবস্থাও। কিন্তু, রাজ্য সরকারের পর্যটন এবং স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে এ নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনা, বৈঠক হলেও কিছু ‘সমন্বয়ের অভাবে’র অভিযোগ সামনে আসছে। এর জেরেই সান্দাকফু ভ্রমণ নিয়ে নিয়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পাহাড়ের গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) তরফে নতুন বছরের শুরুতেই মানেভঞ্জনে হেলথ ডেস্ক এবং টিম তৈরির জন্য তদ্বির করা শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যের আলাদা নির্দেশিকা যাতে তাড়াতাড়ি জারি করে কার্যকর করা হয়, তা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন জিটিএ-প্রধান অনীত থাপাও।

জিটিএ-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মা রবিবার বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে সাধারণ গাইডলাইন জারি হল। এ বার স্বাস্থ্য নিয়ে নজরদারির বিষয় থাকবে। পুরোটাই পর্যটন দফতর এবং স্বাস্থ্য দফতর মিলে করছে। ওদের দ্রুত বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে মানেভঞ্জন এলাকায় একটি আলাদা অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে। পর্যটন দফতরের তরফে সেটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর বাইরে একটি হেলথ ডেস্ক চালু হবে। সেখানে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের রাখা হবে। সেখানে প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। ব্লাড প্রেসার, ওজন, সুগার টেস্ট-সহ প্রাথমিক কিছু পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এর বাইরে পর্যটকদের নিজেদের এলাকা থেকে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট আনা বাধ্যতামূলক করার ভাবনাও রয়েছে।

এর বাইরে একটি ফর্ম পর্যটকদের পূরণ করতে হবে। তাতে কিছু শারীরিক পরিস্থিতির কথা লিখতে হবে। এই ফর্মের বিষয়টি দেখভাল করবেন পর্যটন দফতরের কর্মীরা। তাই দু’টি দফতরের তরফে একাংশ কর্মীকে সেখানে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হচ্ছে। সেই তালিকা এবং পরিকাঠামো নিয়ে দুই দফতরের আলোচনা চলছে। দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন,

গত এক মাসে সান্দাকফুতে দু’টি মৃত্যুর ঘটনা গোটা রাজ্য তো বটেই, দেশের পর্যটন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। সেখানে দ্রুত হেলথ ডেস্ক চালু করাটা জরুরি। যদিও দার্জিলিঙের সদর মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা বলেছেন, ‘‘প্রশাসনিক স্তরে প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বাকিটা স্বাস্থ্য ও পর্যটন দফতর দেখছে। আশা করছি, স্বাস্থ্যের নতুন নির্দেশিকা তাড়াতাড়ি জারি হবে।’’

প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর বা পর্যটন দফতর হেলথ ডেস্কের কথা ভাবলেও সান্দাকফু এলাকাতেও একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি জরুরি বলে পর্যটন মহলে মনে করে। সেখানে আপৎকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকাটা প্রয়োজন। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এলাকায় স্থায়ী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রয়োজন। কারণ, এ দেশ তো বটেই, নেপালের দিক থেকেও পর্যটকেরা আসেন। সবার স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল করাটা জরুরি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sandakphu

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy