Advertisement
E-Paper

খরচে অনীহা, সুনসান মেলা

নোট বাতিলের প্রভাব মালদহের ঐতিহ্যবাহী কার্তিক পুজোর মেলাতেও। শুরুর তিনদিন পরেও জমে ওঠেনি মেলা। ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও দেখা নেই ক্রেতাদের। ফলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২০

নোট বাতিলের প্রভাব মালদহের ঐতিহ্যবাহী কার্তিক পুজোর মেলাতেও। শুরুর তিনদিন পরেও জমে ওঠেনি মেলা। ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও দেখা নেই ক্রেতাদের। ফলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরোর অভাবে সাধারণ মানুষ মেলা মুখো হচ্ছেন না বলে জানালেন মোথাবাড়ি থেকে আসা মিষ্টি ব্যবসায়ী শিবু ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় ১৫ বছর ধরে আমি মালদহের এই কার্তিক পুজোর মেলাতে আসি। বিভিন্ন ধরনের ঝুরি, মালপোয়া ও অন্য মিষ্টি বিক্রি করি। প্রতি বছরই এখানে ব্যবসা করে লাভের মুখ দেখতে পাই। এ বার দোকানে বসেই দিন কাটছে। খুচরো নেই বলে বোধহয় আর কেউ দোকানমুখো হচ্ছে না।’’

ইংরেজবাজার শহরের ফুলবাড়িতে সাহা পরিবারের কার্তিক পুজো অতি প্রাচীন। ঠিক কত সালে পুজো শুরু হয়েছিল তা বর্তমান বংশধরদের কাছেও অজানা। তবে সেই নিয়ম নিষ্ঠায় আজও ঘটা করে পালিত হয়ে আসছে কার্তিক পুজো। এখানে তিনটি সারিতে প্রতিমা রাখা হয়। প্রথম সারিতে রাম, লক্ষ্মণ, শিব সহ একাধিক দেবতা। মাঝের সারিতে গণেশ, কার্তিক, রম্ভা এবং শেষ সারিতে রয়েছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, অন্নপূর্ণার মতো দেবদেবীর মুর্তি। সোনা এবং রুপোর অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয় প্রতিমা। এই প্রতিমার সঙ্গে থাকে অজস্র ছোট ছোট কার্তিকের মূর্তি। অনেকেই মানত করেন। আর মানত পূরণ হলে আনেন কার্তিকের মূর্তি। সেই মূর্তিগুলিকেও পুজো করা হয়। বুধবার রাতে পুজোর পর পাঁচ দিন ধরে চলছে চন্ডীপাঠ। পুজোর শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে মহানন্দা নদীতে প্রতিমা বির্সজন করা হয়। প্রতিমা বির্সজনের দিন হয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। সেই সঙ্গে নদীর ঘাটে আতসবাজিরও প্রদর্শনীও হয়। আর নৌকাতে করে ঘোরানোর পর বিসর্জন দেওয়া হয় দেব সেনাপতিকে।

সাহা পরিবারের এই পুজোকে ঘিরে জমজমাট মেলা বসে শহরের ফুলবাড়িতে। মন্দিরে প্রতিমা পাঁচদিন থাকলেও মেলা চলে ১৫ দিন ধরে। আর মেলায় মনোহারি, ফাস্ট ফুড, কাঠের আসবাব পত্র, ছোটদের খেলার সামগ্রী সহ আরও নানা পসরা নিয়ে হাজির হন প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী। এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ বেসন, আটা দিয়ে তৈরি মিষ্টি ঝুরি এবং ভাটের খই। কথিত রয়েছে, এই ঝুরি ও খই কার্তিকের পছন্দের খাবার। তাই তা প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করেন সাধারণ মানুষ। তবে এখনও ক্রেতারা মেলামুখী না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পুরাতন মালদহের সাহাপুরের বাসিন্দা চন্দন সাহা, কাজল সাহারা বলেন, ‘‘মানুষের ঘরে টাকা নেই। খুচরোর জন্য ব্যাঙ্কের সামনে লাইন দিয়ে সময় চলে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ভাত, ডাল জোগাড় করতেই ব্যস্ত মানুষ। তাই মেলায় পসরা সাজিয়েও মাছি তাড়িয়েই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে।’’

প্রতিবার ঠাকুর দেখার পাশাপাশি মেলাও থাকে অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু এ বার তপন সরকার, দুলাল রায়রা বললেন, ‘‘একটা একশো টাকার নোট হাতে থাকলে মনে হচ্ছে একদিন খেতে পাব। মেলায় এসে বাড়তি খরচের কথা ভাবতেই পারছি না।’’ তাই ঐতিহ্যের কার্তিক পুজো দেখেই ঘরমুখী তাঁরা।

Demonetisation Kartick Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy