Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি কি কমছে, ধন্দে স্বাস্থ্যকর্তারা

শিলিগুড়িতে জ্বর, ডেঙ্গি নিয়ে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবারও সন্তু পাল নামে মাটিগাড়ার এক বাসিন্দা খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৯
অসুস্থ: শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগী। নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ: শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগী। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গের মৃত্যু এবং জ্বরে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে চলায় উদ্বেগ বাড়ছে।

শিলিগুড়িতে জ্বর, ডেঙ্গি নিয়ে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবারও সন্তু পাল নামে মাটিগাড়ার এক বাসিন্দা খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন। শনিবার সকালে আলিপুরদুয়ারে মারা যান পূরবী চট্টোপাধ্যায় এক মহিলা। তারও ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল। ওই দিনই চামুর্চিতে এক যুবক অজানা জ্বরে মারা গিয়েছেন। গত শুক্রবার মালদহে মারা গিয়েছেন ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা সমাপ্তি দাস।

এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমছে বলে স্বাস্থ্য দফতর গত কয়েকদিন ধরে দাবি করলেও বাস্তবে পরিস্থিতি কমছে না বাড়ছে, তা নিয়ে ধন্দে চিকিৎসক, জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশও।

আলিপুরদুয়ারে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, ‘‘রাজ্যে সর্বত্র ডেঙ্গি হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারে আমাদের বিজেপি নেতা কুশল চট্টোপাধ্যয়ের মায়ের ডেঙ্গি হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। শাসক দলের নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়ের ডেঙ্গি হয়েছে। রাজ্য সরকার বলেছে ডেঙ্গি নেই। নিজেদের ঘরে ডেঙ্গি ঢুকে গিয়েছে। রবিবাবুর মেয়ে সুস্থ হোক এই কামনা করি।’’ আলিপুরদুয়ার জেলায় গত কয়েক মাসে ডেঙ্গি আক্রান্ত সংখ্যা প্রায় সাড়ে আটশো ছাড়িয়েছে। কুশলবাবু জানান, হাসপাতালের চিকিৎসায় মা সুস্থও হয়। শ্বাসকষ্ট-সহ নানা রোগ থাকায়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। মা বার বার বাড়ি যেতে চাইছিল। শনিবার বাড়িতে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।

জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকারের দাবি, ‘‘শীত পড়তে শুরু করায় জেলায় ডেঙ্গি কিংবা জ্বর পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে৷ জেলার ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে ১৬টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে জ্বরে আক্রান্ত কিছু রোগী ভর্তি থাকলেও ডেঙ্গি আক্রান্ত নেই।’’ কিন্তু সরকারি হিসাবে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচশো ছাড়িয়ে গিয়েছে৷

এখনও প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। তাঁদের একাংশের ডেঙ্গি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশো ছাড়িয়েছে। বেসরকারি মতে তা সাড়ে চারশোরও বেশি। মেডিসিন বিভাগ রোগীর ভিড়ে ঠাসা। করিডরে রোগী রাখতে হচ্ছে।

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের পরিস্থিতিও একই। মালদহ মেডিক্যালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘পাশের জেলাগুলি থেকে জ্বরে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীকেই এখানে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। তবে কাউকে ফেরানো হচ্ছে না।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহজাহান সিরাজ জানান, ডেঙ্গি নিয়ে জেলাজুড়ে জোর সচেতনতা চলছে।

দুই দিনাজপুরেই জ্বর, জেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছে। রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বর্তমানে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ২০ জন ভর্তি রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগের এনএস১ পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ রক্তপরীক্ষা রিপোর্ট পরিবারকে দিচ্ছেন না। তাতে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ধোঁয়াশায় তাঁরা। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে এক যুবকের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং রোগ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে গত শনিবার হাসপাতালে ভাঙচুরও ঘটে। বালুরঘাট হাসপাতালে এখনও জ্বর নিয়ে ভর্তি অন্তত ৩০ জন। আবার, ধূপগুড়িতে রোগ প্রতিরোধে পথে নেমেছেন উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরাই।

মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দের দাবি, অন্য জায়গায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিলেও এ বছর এখনও পর্যন্ত জেলায় রোগের প্রকোপ কম। ডেঙ্গিতে যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তারাও বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে পরে রেফার হয়ে মালদহ এবং কলকাতার হাসপাতালে মারা যান।

Dengue ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy